ভালো ব্যবসা ও ভালো রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেয়ারবাজার থেকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে উচ্চ প্রিমায়াম নিয়ে ১১২ টাকায় শেয়ার ইস্যু করেছিল ক্রাউন সিমেন্ট। সেই কোম্পানি এখন শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড দিচ্ছে মাত্র ১০ শতাংশ বা ১ টাকা। যে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ করে ক্যাপিটাল ও ডিভিডেন্ড উভয় ক্ষেত্রেই বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়েছে।ক্রাউন সিমেন্টের পণ্যের উপর বিশ্ব আস্থা রাখে বলে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও শেয়ারবাজারে অনাস্থায় ডুবছে। কোম্পানিটির চমক দেখানো সেই বিজ্ঞাপন: “হোয়াট হ্যাপেনড কুদ্দুস? লুক স্যার ক্রাউন সিমেন্ট। সো? মেড ইন বাংলাদেশ স্যার! ইওর বিল্ডিং মাই কান্ট্রিজ সিমেন্ট স্যার! উই আর ভেরি প্রাউড স্যার।” চটকদার সেই বিজ্ঞাপনে আস্থার কথা থাকলে দেশের শেয়ারবাজারে হতাশ করছে বিনিয়োগকারীদের।ডিভিডেন্ড ও মুনাফায় সমানতালে চলছে পতন। পতনের কারণ হিসাবে কোম্পানিটি বলছে, কাচাঁমালের দাম ও ভাড়া বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের কারণে মুনাফায় ধস নেমেছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ডিভিডেন্ডেও।কোম্পানিটি ২০১০-১১ অর্থবছরে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজারে আসে। ওই সময় প্রতিটি শেয়ার ১১১ টাকা ৬০ পয়সায় করে ইস্যু করে। এতে প্রতিটি শেয়ারে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ১০১ টাকা ৬০ পয়সা। কিন্তু সেই কোম্পানি এবছর ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য মাত্র ১০ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। যা ইস্যু মূল্য বিবেচনায় রিটার্ন ১ শতাংশেরও কম বা শুন্য দশমিক ৯০ শতাংশ।২০১১ সালে তালিকাভুক্তির বছরে ক্রাউন সিমেন্ট ৩৫ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। এরপর ২০১২ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০১৫ সালে ২৫ শতাংশ নগদ, ২০১৫ সালে ২৫ শতাংশ নগদ, ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ নগদ, ২০১৭ সালে ২০ শতাংশ নগদ, ২০১৮ সালে ১৫ শতাংশ নগদ, ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ১০ শতাংশ নগদ ও ২০২১ সালে ২০ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। আর এবার ২০২২ সালে ঘোষণা করল ১০ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড।ক্রাউন সিমেন্টের আগের নাম ছিল এমআই সিমেন্ট। আইপিওর আগে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) দেখিয়েছিল ৯ টাকা ৩৯ পয়সা। যা সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৫৪ পয়সায়। ১৩ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ১০ টাকা ৯৩ পয়সা বা ১১৬ শতাংশ। আর ডিভিডেন্ড কমেছে ৩৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে। যদিও রপ্তানিতে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ সবার ওপরে থাকার দাবি করছে।