উত্থান ভ্রমণে, পতন পাট খাতে
সপ্তাহের ব্যবধানে ফের সূচক ও লেনদেনের পতনের মাধ্যমে গত সপ্তাহ পার করছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহটিতে সূচক কমার সঙ্গে লেনদেন কমেছে। এর আগের সপ্তাহে পতনের ধারাবাহিকতা কাটিয়ে কিছুটা উত্থান হয়েছিল পুঁজিবাজারে। গত সপ্তাহে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। এদিকে গত সপ্তাহে পতনের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে থাকা ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে বড় উত্থান হয়েছে। ফলে আলোচ্য খাতে শেয়ারদর সব থেকে বেশি বেড়েছে। এর বিপরীতে গত সপ্তাহে পাট খাতে সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে। ফলে আলোচ্য খাতে শেয়ারদর বেশি কমেছে। এদিকে দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আর্থিক খাতের শেয়ার। এছাড়া গত সপ্তাহে টেলিকমিউনিকেশন, মিউচুয়াল ফান্ড এবং সিমেন্ট খাত ছাড়া বাকি সব খাতে শেয়ারদর কমেছে।বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে আগ্রহ বেশি থাকা ভ্রমণ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ বা ৫৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্থিক খাতে গত সপ্তাহে দর বেড়েছে দশমিক ১০ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৫০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এছাড়া গত সপ্তাহে টেলিকমিউনিকেশন, মিউচুয়াল ফান্ড এবং সিমেন্ট খাতের শেয়ারদর কমা বা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হয়নি।এদিকে গত সপ্তাহে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে পাট খাতে। এ খাতে গত সপ্তাহে ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১ দশমিক ৩০ শতাংশ বা ২৭ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ারদর কমে আইটি খাত দ্বিতীয় স্থানে ছিল। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ বা ১৬০ কোটি টাকা।অন্যদিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ খাতে। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ বা ৩১৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু খাতটিতে গত সপ্তাহে দুই শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩ শতাংশ বা ২১৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু এ খাতে গত সপ্তাহে মাত্র দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক হাজার ৬৮১ কোটি ২০ লাখ সাত হাজার ৬৫২ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ৪৫৫ কোটি ৬৪ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেনে ৭৭৪ কোটি ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ১৪৫ টাকা কমেছে।সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৪ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২০২.২১ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ১৫ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৩ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৫৭ দশমিক ৫৪ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ১৯৮ দশমিক ৫১ পয়েন্টে।গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৮১টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৯টির বা ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশের, কমেছে ১৪৭টির বা ৩৮ দশমিক ৫৮ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১৫টির বা ৫৬ দশমিক ৫৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিটদর।অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ১০৪ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১১১ কোটি ৬৭ লাখ ৯৭ হাজার ১৫৭ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ৫৯ কোটি ৪৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫৩ টাকা কমেছে।সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১১৯ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩২৭ দশমিক ৫১ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪টির বা ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশের দর বেড়েছে, ৭৩টির বা ২৯ দশমিক ৯২ শতাংশের কমেছে এবং ১৫৭টির বা ৬৪ দশমিক ৩৪ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।