উচ্চমূল্যে শেয়ার ইস্যু করা পেনিনসুলার ইপিএস ৭ বছর ধরে ১ টাকার নিচে
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পেনিনসুলা চিটাগাংয়ের ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন ২২) ব্যবসায় বড় লোকসান হয়েছে। যাতে কোম্পানিটির আগের অর্থবছরের থেকে ২০২১-২২-এ মুনাফা কমে এসেছে। এতে করে উচ্চমূল্যে শেয়ারবাজারে শেয়ার ইস্যু করা কোম্পানিটির আগের ৬ অর্থবছরের ন্যায় ২০২১-২২ অর্থবছরেও শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) ১ টাকার নিচেই রয়েছে।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া পেনিনসুলা শেয়ারবাজারে প্রতিটি শেয়ার ৩০ টাকা করে ইস্যুর মাধ্যমে ১৬৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। কোম্পানিটির সেসময় আইপিওতে আসার আগে (২০১২-১৩ অর্থবছর) ইপিএস হয়েছিল ২.৪৯ টাকা। সেই কোম্পানিটির ইপিএস তালিকাভুক্তির পরে বিগত ৬ অর্থবছরের ন্যায় ২০২১-২২ অর্থবছরেও ১ টাকার কম হয়েছে।কোম্পানিটির ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই ২১-মার্চ ২২) ইপিএস হয়েছিল ০.৭২ টাকা। তবে বছর শেষে এই মুনাফার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ০.১৯ টাকায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেষ প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ০.৫৩ টাকা। কিন্তু ওইসময়ে দেশের হোটেল ব্যবসা ছিল স্বাভাবিক।ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ি, কোম্পানিটির ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছিল ০.৩১ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে ০.৩৩ টাকা ও তৃতীয় প্রান্তিকে ০.০৮ টাকা হয়েছিল। এতে করে ৩টি প্রান্তিকের একত্রে বা ৯ মাসে ইপিএস হয়েছিল ০.৭২ টাকা।এদিকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ গতকাল (১৮ অক্টোবর) পুরো ২০২১-২২ অর্থবছরের যে আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেছে, সেখানে ইপিএস দেখিয়েছে ০.১৯ টাকা। এ হিসাবে শেষ প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে।কোম্পানিটির ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি ০.৭২ টাকা হিসেবে নিট মুনাফা হয়েছিল ৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। যা ১২ মাসে বা পুরো বছরে শেয়ারপ্রতি ০.১৯ টাকা হিসেবে নেমে এসেছে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকায়। অর্থাৎ শেষ প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে ৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা।মুনাফায় এই পতনের কারন হিসেবে পেনিনসুলা কর্তৃপক্ষ ডিএসইকে জানিয়েছেন, আয় বা বিক্রি ২২.৬৫% বাড়লেও প্রশাসনিক ব্যয় ২৭.৯৩%, বিক্রিত পণ্যের উৎপাদন ব্যয় ৪৫.৪৫% ও বিক্রি ব্যয় ৩৭.৪৭% বেড়েছে। যাতে করে নিট মুনাফা কমেছে ৫২.৫৫%।শেষ প্রান্তিকের বড় লোকসানে কোম্পানিটির আগের বছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে মুনাফা কমেছে। আগের অর্থবছরের ০.৪১ টাকার ইপিএস এ বছর কমে এসেছে ০.১৯ টাকায়। এর মাধ্যমে ৩০ টাকা ইস্যু মূল্যের কোম্পানিটির ইপিএস বিগত ৬ বছরের ন্যায় এবারও ১ টাকার নিচে থাকল।কোম্পানিটির ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার নিট মুনাফা হলেও ২.৫০ শতাংশ হারে বা শেয়ারপ্রতি ০.২৫ টাকা হিসাবে শেয়ারহোল্ডারদেরকে ২ কোটি ৯৭ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হবে। মুনাফার অতিরিক্ত ৭২ লাখ টাকা রিজার্ভ থেকে দেওয়া হবে।পেনিনসুলা চিটাগাংকে শেয়ারবাজারে আনার ক্ষেত্রে ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করে লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্টস।উল্লেখ্য ২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া পেনিনসুলা চিটাগাংয়ের বর্তমানে ১১৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধন রয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দর দাড়িঁয়েছে ২৮.৬০ টাকায়।