তৃতীয় প্রান্তিকে সাড়ে আট কোটি টাকা লোকসানে সিঙ্গার
কভিড-১৯-এর প্রভাব কাটিয়ে ওঠার আগেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ, সম্প্রতি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ার প্রভাবে চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২২) প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকার লোকসান গুনেছে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।প্রাপ্ত তথ্যমতে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠানটি ধারাবাহিকভাবে মুনাফা করে এলেও চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে আট কোটি ৫০ লাখ টাকা লোকসান করেছে। এর আগের হিসাববছরের একই সময়ে ১২ কোটি ৭২ লাখ টাকা মুনাফা করেছিল। তবে আগের বছরের তুলনায় ৪৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা কমে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর, ২০২২) করপরবর্তী মুনাফা করেছে ১৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মুনাফা কমে যাওয়া এবং লোকসানের কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ কভিড-১৯ মহামারি-পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনাকে হতাশাগ্রস্ত করেছে। পণ্য পরিবহন, বিদ্যুৎ এবং খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব অব্যাহত থাকায় আলোচিত সময়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হতাশাব্যঞ্জক হয়ে পড়ে। এসব প্রতিকূলতা যেমন অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে, তেমনি ভোক্তারা খুব প্রয়োজন ছাড়া পণ্য ক্রয় করেনি। এছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার উল্লেখযোগ্য অবমূল্যায়নের কারণে আমদানি ব্যয় অনেক বেড়েছে। বিশ্বব্যাপী লজিস্টিক খরচ বৃদ্ধি দ্রব্যমূল্যের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এছাড়া গত কয়েক মাস ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দাম বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করেছে। এতে গৃহস্থালি জিনিসপত্রের পরিবর্তে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার প্রতি আগ্রহী হয়েছে গ্রাহকরা। সামগ্রিকভাবে গত ৯ মাসে ব্যবস্থাপনার প্রত্যাশা এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি কোম্পানিটি।এদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৪৬ পয়সা, আগের হিসাববছরের একই সময়ে যা ছিল ৫ টাকা ৯৭ পয়সা। সে হিসেবে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ইপিএস কমেছে ৪ টাকা ৫১ পয়সা। অন্যদিকে চলতি হিসাবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৮৫ পয়সা (লোকসান), আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ২৮ পয়সা। অন্যদিকে ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৫৩ পয়সা। আর প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৭ টাকা ২৪ পয়সা (ঘাটতি), যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৭ টাকা ৭৯ পয়সা (ঘাটতি)।এদিকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ৬০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ২০ পয়সা এবং ৩১ ডিসেম্বরে শেয়ারপ্রতি এনএভি দাঁড়ায় ৩৪ টাকা ৬ পয়সা। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৮৫ পয়সা এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকা ১৯ পয়সা। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৮৫ পয়সা এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকা ১৯ পয়সা।