টানা তিন বছর ধরে লোকসানে অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ
![টানা তিন বছর ধরে লোকসানে অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/3531/news_323251_1.jpg)
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ লিমিটেড সর্বশেষ তিন বছর ধরে টানা লোকসানে রয়েছে। অবশ্য প্রতি বছর কোম্পানিটির লোকসানের পরিমাণ কমে আসছে। লোকসানের কারণ হিসেবে কোম্পানিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্রেতা সংকটে তাদের ব্যবসার পরিধি ছোট হয়ে আসছে।কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯-২০ হিসাব বছর থেকে লোকসানে রয়েছে অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ। ওই হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে ৪০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরে এ আয় হয়েছিল ১১০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ২০১৯-২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরে নিট মুনাফা হয়েছিল ৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। লোকসান হওয়ায় ২০১৯-২০ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। এর আগের হিসাব বছরে ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা।আলোচ্য হিসাব বছরের ধারাবাহিকতায় পরের বছর অর্থাৎ ২০২০-২১ হিসাব বছরেও লোকসান হয়েছে অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজের। ওই হিসাব বছরে আগের হিসাব বছরের তুলনায় বিক্রি বাবদ আয় সামান্য বৃদ্ধির পাশাপাশি কোম্পানিটির নিট লোকসান কমেছে। আলোচ্য বছর কোম্পানিটির মোট আয় হয়েছে ৪৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি।সর্বশেষ ২০২১-২২ হিসাব বছরে আগের দুই বছরের তুলনায় বিক্রি বাবদ আয় সামান্য বাড়ার পাশাপাশি লোকসান কমেছে কোম্পানিটির। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির মোট আয় হয়েছে ৪৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। যা আগের হিসাব বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। আর সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এ লোকসান আগের হিসাব বছরের তুলনায় ৪৩ দশমিক ৫২ শতাংশ কম। সর্বশেষ হিসাব বছরে লোকসান কমলেও শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশের সুপারিশ করেনি কোম্পানিটির পর্ষদ।এ বিষয়ে অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজের কোম্পানি সচিব মো. হাবিবুল্লাহ বণিক বার্তাকে বলেন, করোনাকালেই আমাদের বিক্রি কমে গিয়েছে। মূলত আমাদের কিছু নির্ধারিত ক্রেতা ছিল, যার বড় একটা অংশ এখন নেই। এজন্য বিক্রি কম হওয়ায় কয়েক বছর ধরে লোকসান গুনতে হচ্ছে। আমরা এখন নতুন ক্রেতার সন্ধান করছি। আশা করছি, শিগগিরই আমরা লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারব।এদিকে চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকেও (জুলাই-সেপ্টেম্বর) লোকসান হয়েছে কোম্পানিটির। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এর আগের হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে যেখানে এ লোকসান ছিল ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ। বর্তমানে কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন রয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ১৬৯ কোটি ৫২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১৬ কোটি ৯৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৮২। এর মধ্যে ২৫ দশমিক ৮১ শতাংশ কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ৫৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজের শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ১১ টাকা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ১০ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১৬ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছে।সর্বশেষ প্রকাশিত রেটিংস অনুসারে, অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজের ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ট্রিপল বি’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-থ্রি’। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে এ প্রত্যয়ন করে ন্যাশনাল ক্রেডিট রেটিংস (এনসিআর) লিমিটেড।