স্বল্প মূলধনী শেয়ারের জোয়ার, সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ
![স্বল্প মূলধনী শেয়ারের জোয়ার, সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/6677/share-w.jpg)
শেয়ারবাজারে এক বছরের বেশি সময় ধরে মন্দাভাব বিরাজ করছে। কিন্তু দীর্ঘ মন্দার মধ্যেও মাঝেমধ্যে স্বল্প মূলধনী কিছু কোম্পানির শেয়ার দরে দেখা যায় উল্লম্ফন। গত মার্চের মধ্যভাগ থেকে স্বল্প মলূধনী কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২-৪টি ছাড়া সিংহভাগ শেয়ার দরে চলছে জোয়ার। এরমধ্যে নানা গুঞ্জনে লোকসানি ও ডিভিডেন্ড না দেওয়া বা নামমাত্র ডিভিডেন্ড দেওয়া শেয়ার নিয়ে চলছে অস্বম্ভব মাতামাতি। বাজার সংশ্লিষ্ট স্বল্প মূলধনী এসব শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন।গত এক বছর ধরে দেশের শেয়ারবাজারে চলছে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে। যেখানে ৭০ শতাংশের বেশি কোম্পানির শেয়ারদর ফ্লোরে আটকে আছে, ঠিক সেখানে তেলেসমাতি দেখিয়ে চলেছে স্বল্প মূলধনী কিছু কোম্পানির শেয়ার। কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর গত ১৫ দিনে বেড়েছে সর্বোচ্চ ৬৪ শতাংশ। যেখানে ফান্ডামেন্টাল কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা, সেখানে এসব মৌল ভিত্তিহীন কোম্পানিগুলোর শেয়ারের এমন তেলেসমাতি শেয়ারবাজারকে আরও বেশি অসুস্থ পরিবেশ করে তুলছে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।বিশ্লেষকরা বলছেন, যে সকল কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বেড়েছে, সেই কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রির সময় এগিয়ে এসেছে। এখন কারসাজি চক্র কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে মুনাফা তুলবে। এতে করে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তাই এই সকল শেয়ার থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দুরে থাকার পরামর্শ দেন তারা।উদাহরণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলেন, কিছুদিন আগে এই কোম্পানিগুলোর মতো ওরিয়ন ইনফিউশনেরও শেয়ারদর বেড়েছে হু হু করে। কিন্তু কোম্পানিটির শেয়ারদর একহাজার টাকা ছুয়ে আবারও ২০০ টাকার ঘরে এসেছে। এতে করে সর্বোচ্চ দরে শেয়ার কেনা বিনিয়োগকারীদের লোকসান দাঁড়িয়েছে ৮০০ টাকা। যার ফলে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীকে পথে বসতে হয়েছে। ঠিক একই পথে হাটছে স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ার। যা বিনিয়োগকারীদের অনেক বেশি ক্ষতির মূখে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।জানা গেছে, গত ১৫ দিনে সবচেয়ে বেশি শেয়ারদর বৃদ্ধি পাওয়া স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর মধ্যে লিগ্যাসী ফুটওয়্যারের শেয়ারদর বেড়েছে সর্বোচ্চ। গত ১৫ দিনে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৫১ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে অবস্থান করছে ৮৩ টাকা ৭০ পয়সায়। গত ১৫ দিনে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩২ টাকা ৬০ পয়সা বা ৬৪ শতাংশ।একইভাবে, জেমিনি সী ফুডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৫৬ টাকা ৭০ পয়সা বা ৫৬ শতাংশ। ১৫ দিন আগে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৪৫৮ টাকা ১০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭১৪ টাকা ৮০ পয়সায়।বিডি অটোকারসের শেয়ারদর বেড়েছে ৩৭ টাকা ৬০ পয়সা বা ৩২ শতাংশ। ১৫ দিন আগে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ১২২ টাকা ৩০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫৪ টাকা ৯০ পয়সায়।সমতা লেদারের শেয়ারদর বেড়েছে ১৪ টাকা ৮০ পয়সা বা ২৭.৫৬ শতাংশ। ১৫ দিন আগে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৫৩ টাকা ৭০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৮ টাকা ৭০ পয়সায়।এপেক্স ফুডস শেয়ারদর বেড়েছে ৫৮ টাকা ৭০ পয়সা বা ২৫.১৯ শতাংশ। ১৫ দিন আগে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২৩৩ টাকা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৯১ টাকা ৭০ পয়সায়।এছাড়াও, ইনটেকের ২২ শতাংশ, জিকিউ বলপেনের ২০.২৬ শতাংশ, সোনালী আঁশের ১৮.৩৪ শতাংশ, এপেক্স ফুটওয়্যারের ১৮.০৭ শতাংশ, আজিজ পাইপসের ১৭.১৭ শতাংশ, মুন্নুস্পুলের ১২.৭৬ শতাংশ, বিডি ল্যাম্পের ১২.৬৯ শতাংশ এবং পেপার প্রসেসরের ১০.৮৫ শতাংশ করে শেয়ারদর বেড়েছে।