স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের লোকসান বেড়েছে

Date: 2023-01-19 20:00:11
স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের লোকসান বেড়েছে
চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের আয় কমার পাশাপাশি লোকসানের বোঝা আরো বেড়েছে। এর আগের হিসাব বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান বেড়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। জাহাজীকরণ ব্যয় বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ও কাঁচামালের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হওয়ায় আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসান বেড়েছে। সিরামিক খাতের কোম্পানিটির সর্বশেষ প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের আয় হয়েছে ৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় কমেছে ৪৬ লাখ টাকা ৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ। সর্বশেষ প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এর আগের হিসাব বছরের একই প্রান্তিকে এ লোকসান হয়েছিল ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির লোকসান বেড়েছে ৪৩ লাখ টাকা বা ২৮ দশমিক ৬২ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩ টাকা। এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ লোকসান ছিল ২ টাকা ৩৩ পয়সা। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ৬৫ পয়সায়।আলোচ্য প্রান্তিকে লোকসান হওয়ার কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, করোনা মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সার্ভিকভাবে অর্থনীতি নিম্নমুখী রয়েছে। পণ্য উৎপাদনের জন্য বিদেশ থেকে আমদানীকৃত কাঁচামালের দামও এ সময়ে চড়া ছিল। এর বাইরে এ সময়ে জাহাজীকরণ ব্যয় বৃদ্ধি ও ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এসব কারণে আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির বিক্রি ও গ্রস মুনাফা কমেছে। তবে এ সময়েও কোম্পানিটি তাদের কর্মীদের সম্পূর্ণ বেতন পরিশোধ ও অন্যান্য স্থায়ী ব্যয় নির্বাহ করেছে। তাই চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটিকে লোকসান গুনতে হয়েছে।৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশের সুপারিশ করেনি স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৯৯ পয়সা। এর আগের হিসাব বছরে যেখানে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২৪ পয়সা। সদ্য সমাপ্ত বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৬৬ পয়সায়। এর আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৯ টাকা ৭২ পয়সায়।২০২০-২১ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২৪ পয়সা। যেখানে আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৬ টাকা ৩২ পয়সা।এর আগে ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯-২০ হিসাব বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পায় কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা। ২০১৬-১৭ হিসাব বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৬ কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৬৪ লাখ ৬০ হাজার ৬৫০টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকের হাতে রয়েছে ৩০ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক ও ৬৫ দশমিক ৪২ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।ডিএসইতে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ১৩৩ টাকা ৫০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১২২ টাকা ও ১৮৪ টাকা।

Share this news