সংশোধিত মার্জিন নীতি বাজার চাঙ্গা করতে কতটা কার্যকর হবে

Date: 2023-04-23 05:00:16
সংশোধিত মার্জিন নীতি বাজার চাঙ্গা করতে কতটা কার্যকর হবে
শেয়ারবাজার দীর্ঘমেয়াদে মন্দাভাব এবারই বোধহয় রেকর্ড করেছে। এর আগে এতো দীর্ঘকাল শেয়ারবাজারে এমন মন্দাভাব দেখা যায়নি।শেয়ারবাজারের মন্দাভাব কাটাতে এরই মধ্যে মৌলভিত্তির বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারে মার্জিন সুবিধা দিয়ে শেয়ারবাজারকে গতিশীল ও চাঙ্গা করতে মার্জিন ঋণ নীতিমালায় সংশোধন এনেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)৷বিএসইসি মনে করছে, মার্জিন ঋণের নীতিমালা পরিবর্তনে শেয়ারবাজার গতিশীল ও চাঙ্গা হবে। কিন্তু মার্জিন ঋণ নীতিমালায় এই পরিবর্তন গতিশীল ও চাঙ্গা শেয়ারবাজারে জন্য কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্জিন ঋণ নীতিমালায় এই পরিবর্তন এই মূহুর্তে তেমন কোনো ভূমিকা রাখবে না। কারণ মার্জিন ঋণ নীতিমালার পরিবর্তন অনুযায়ি, মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ৪০-এর বেশি কিন্তু ৫০-এর কম শেয়ারগুলোই মার্জিন পাবে। দ্বিতীয়ত, যেসব কোম্পানির মূলধন ৫০ কোটি টাকার বেশি, সেগুলো মার্জিন পাবে। তৃতীয়ত, যেসব কোম্পানি গত তিন বছর যাবত ‘এ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে, সেগুলো মার্জিন পাবে।বিএসইসির নতুন এই নিয়ম অনুসারে, মাত্র চারটি কোম্পানির শেয়ার মার্জিন ঋণের সুবিধা পাবে। বাকি যে সকল কোম্পানির পিই রেশিও ৪০ এর কম তারাতো আগে থেকেই মার্জিন ঋণের সুবিধায় রয়েছে। এই ৪টি কোম্পানির পিই রেশিও ৪০ এর বেশি থাকায় নতুন মার্জিন নীতিতে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের বিপরীতে মার্জিন পাবে বিনিয়োগকারীরা।শেয়ারবাজারের গতিবিধি নির্ধারণের জন্য মার্জিন প্রবিধানকে একটি অস্ত্র হিসাবে বিভিন্ন সময় ব্যবহার করা হয়েছে। এরই আলোকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে, বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের নিজস্ব পোর্টফোলিও সম্পদের বিপরীতে বিতরণ করা যেতে পারে এমন মার্জিন ঋণের পরিমাণের সাথে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রড-ইনডেক্স ডিএসইএক্স ট্যাগ করেছে।বলা হয়েছে যদি ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ৪০০০ পয়েন্টের নিচে চলে যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীদের ইকুইটির ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন লোন হিসেবে ধার দেওয়া যেতে পারে। যখন সূচক ৬০০০ অতিক্রম করে, তখন ঋণের অনুপাত ২৫ শাতাংশ কমে যাবে।পরে ২০২১ সালের এপ্রিলে মার্জিন ঋণের পরিবর্তন এনে সুচক ৭০০০ পযন্ত ৮০ শতাংশ করা হয়েছে। আবার ২০২২ সালের মে মাসে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাজারে প্রভাব পড়ে। এতে করে বাজার খারাপ হতে থাকে। সেখান থেকে পরে বাজারকে টেনে তুলতে মার্জিন ঋণের অনুপাত ১০০ শতাংশে উন্নীত করা হয়। অল্প সময়ের মধ্যে অনেক পরিবর্তন অনেক বিনিয়োগকারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণে এবং অবশ্যই বাজারের আচরণকে বাধাগ্রস্ত করেছে।এর আগে ২০০৭-২০১০ মার্জিন লোনের অনুপাতে বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়েছিল।ডিএসইতে মোট ৪০০টি তালিকাভুক্ত কোম্পানি, ক্লোজড-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং কর্পোরেট বন্ড রয়েছে। এর মধ্যে ২৬০টি কোম্পানি ‘এ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে। এর মানে কোম্পানিগুলো সর্বশেষ সমাপ্ত অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।তবে কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবগুলো কোম্পানি টানা তিন বছর ধরে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে নেই বা কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকারও বেশি নয়।বিএসইসির নতুন মার্জিন নীতিমালার আওতায় পড়ে নতুন সুবিধা পাবে এমন ৪টি কোম্পানির পিই রেশিও ৪০ এর উপরে অবস্থান করছে। এই ৪টি কোম্পানির মধ্যে রয়েছে ডরিন পাওয়ার, আমান ফিডস, আমান কটন এবং বিকন ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড।

Share this news