সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল: মুনাফায় ফেরাচ্ছে সলভেন্ট প্ল্যান

১৯৯০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর স্বল্প মূলধনী কোম্পানি সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল ভালই ব্যবসা করে আসছিল। সে প্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের ভালো ডিভিডেন্ডও দিয়ে আসছিল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে অনাহুত লোকসানের ধাক্কায় মুনাফা ও ডিভিডেন্ডের সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারেনি কোম্পানিটি।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০১৬ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। সে সময়ে কোম্পানিটির মুনাফায়ও ছিল বেশ ঝলক। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে কোম্পানিটি আচমকা বিরুপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। এতে কমে যায় মুনাফা। কমে যায় ডিভিডেন্ডও।এরপর ২০১৭ সালে কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড নেমে আসে ২ শতাংশে। তারপর থেকে কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড ২ শতাংশে আটকে যায়। যদিও মাঝখানে ২০২১ সালে ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালে লোকসানের কারণে কোনো ডিভিডেন্ডই দিতে পারেনি।কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২০ সালে কোম্পানিটির লোকসান শুরু হয়। সে বছর শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ৫১ পয়সা। তার পরের বছর ২০২১ সালে লোকসান বেড়ে দাঁড়ায় ২ টাকা ৪৯ পয়সায়। ২০২২ সালে লোকসান আরও বেড়ে যায়। সে বছর শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ২ টাকা ৬৩ পয়সা।এই সময়ে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ বিকল্প ব্যবসা খুঁজতে থাকে। অবশেষে ব্যবসা মিলেও যায়। কোম্পানিটি হাইড্রো-কার্বন সলভেন্ট উৎপাদনের একটি নতুন প্রকল্প হাতে নেয়। উৎপাদিত হাইড্রো-কার্বন সলভেন্ট বিক্রির জন্য ২০২২ সালের প্রথম দিকে কোম্পানিটি রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) সঙ্গে একটি চুক্তিও সম্পাদন করে। চুক্তি অনুয়ায়ী বিপিসি প্রতিষ্ঠানটি থেকে হাইড্রো-কার্বন সলভেন্ট গ্রহণ করবে।প্রকল্পটি চালু করার পর কোম্পানিটির লোকসান কমতে থাকে। ২০২২ সালে অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকেও কোম্পানিটি লোকসানের কবলে ছিল। প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২২) কোম্পানিটিকে শেয়ারপ্রতি ৮৬ পয়সা লোকসান গুনতে হয়েছে কোম্পানিটিকে। তবে দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে কোম্পানিটি মুনাফায় ফিরে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২২) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১২ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৬৪ পয়সা।তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২৩) কোম্পানিটির মুনাফা আরও কিছুটা বেড়েছে। এই প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১৪ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৫৯ পয়সা।তবে তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে (জুলাই’২২ থেকে মার্চ’২৩) কোম্পানিটি এখনো লোকসানে রয়েছে। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৬০ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১ টাক ৭৫ পয়সা। তবে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ আশা করছে, চলতি বছর শেষে কোম্পানিটি লোকসান থেকে মুনাফায় পদচারণা শুরু করবে।সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের পরিশোধিত মূলধন ২৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। মোট শেয়ার ২ কোটি ৭৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০টি। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৪৫.৩১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৫.৯৭ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ০.৬১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৮.৬৯ শতাংশ শেয়ার।