শেয়ারবাজারের গুরুত্ব বাড়বে আস্তে আস্তে: পরিকল্পনামন্ত্রী

Date: 2023-06-03 21:00:15
শেয়ারবাজারের গুরুত্ব বাড়বে আস্তে আস্তে: পরিকল্পনামন্ত্রী
আমাদের অর্থনীতির উন্নয়নের পথে রয়েছি। এই উন্নয়নের যাত্রায় এখনো শেয়ারবাজারকে হয়তো তেমনটা গুরুত্ব দেয়া হয়না। কিন্তু আস্তে আস্তে শেয়ারবাজারের গুরুত্বটা বাড়বে বরে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।রোববার (০৪ জুন) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) যৌথ উদ্যোগে সিএসজেএফ অডিটরিয়ামে বাজেট পরবর্তী আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, আগামী বাজেটে শেয়ারবাজার কিছুই পায়নি, এ কথাটা আসলে সঠিক নয়। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে দ্বৈত কর প্রত্যাহার, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের ব্যবধানে বাড়ানো এবং সব ধরনেন বন্ড মার্কেটকে সম্পূর্ণ করমুক্ত করার বিষয়গুলো বাজেটে বিবেচনা করার জন্য জানাবো।সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু, চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, ডিবিএ প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান এবং সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু বলেন, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিতে অন্যতম মাধ্যম হওয়ার কথা দেশের শেয়ারবাজার। কিন্তু আমরা সেই অবস্থান থেকে পিছিয়ে আছি। বিশ্বের সব দেশ শেয়ারবাজার দিয়ে কাঁপিয়ে তুলছে, আমাদের কেন যেন সেই জায়গাটা দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।ডিএসই চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিশ্বের বড় দেশগুলোতে শেয়ারবাজারকে অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেখানে আমাদের দেশে এটাকে কোনঠাসা করে রাখা হচ্ছে। কোনঠাসা হয়ে আছে। আমি বিশ্বাস করি, শেয়ারবাজারকে কোনঠাসা করে রাখা যাবে না, কোনঠাসা থাকবে না। কারণ এটার সঙ্গে দেশের সর্বস্থরের মানুষ আছে। এছাড়াও এর মধ্যে অর্থনীতির ভবিষ্যৎ লুকিয়ে আছে।চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম বলেন, শেয়ারবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জায়গা তৈরি না হলে দেশের অর্থনীতিকে কখনোই স্ট্যাবেল একটা অবস্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তাছাড়া দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য বন্ড মার্কেটের গুরুত্ব বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে জিরো কুপন বন্ডের মতো সব ধরনের বন্ডকে করমুক্ত করা উচিতসিএসই চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশের শিল্পায়নে এখন পর্যন্ত যে বিনিয়োগুলো হয়েছে তার সিংহভাগই ব্যাংকের মাধ্যমে হয়েছে। এটা শেয়ারবাজারে মাধ্যমে হওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু সেটা হয়নি।আসিফ ইব্রাহিম বলেন, আমাদের দেশে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তির বিষয়ে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু দেশে ব্যবসা করা সব বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আসার ব্যপারে অনেক আগে থেকেই বাধ্যতামূলক থাকা উচিত ছিলো। এসময় তিনি এ বড় কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার জোর আহ্বান জানান।বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, বন্ড মার্কেটে লেনদেন বাড়লে সরকারের আয়ও বাড়বে। কারণ লেনদেন যত বাড়বে সরকারের রাজস্বও তত বাড়বে। তাই বন্ড মার্কেটে স্পেশাল টেক্স ব্যবস্থা জরুরিবিএমবিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতিও এগিয়ে যাচ্ছে। তবে কেবল ব্যাংক নির্ভরতা নিয়ে অর্থনীতি পুরোপুরি সাবলম্বী হওয়া সম্ভব না। পুঁজিবাজারই হওয়া উচিত দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। আমরা আগামী বাজেটে বেশ কিছু প্রস্তাব করেছিলাম। এরমধ্যে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কেম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট কর হারের ব্যবধান বাড়ানোর কথা বলেছিলাম। এটা করলে ভালো কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী হবে।তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান এখন ৭ শতাংশ আছে তা ১৫ শতাংশ করার দরকার। আমরা কিছুদিন আগে ১০টি কোম্পানি নিয়ে একটা সার্ভে করেছিলাম। সেখানে আমরা দেখতে পেয়েছি অ-তালিকাভুক্ত কোম্পনির চেয়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো থেকেই তুলনামূলভাবে সরকারের রাজস্ব বেশি এসেছে। এজন্য কর কমিয়ে হলেও কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছি।ছায়েদুর রহমান বলেন, আমাদের বাজারে দুইটা সমস্যা ভালো কোম্পানি বাজারে আসে না। দীর্ঘ মেয়াদি বিনিয়োগ আসে না। উন্নয়ন বা উৎপাদনশীল কোম্পানিগুলো আসতে চাচ্ছে না। এই কর ব্যবধান বাড়ালে অনেক কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসবে বলে মনে করছি। এছাড়াও তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার কমালে সরকারেরও লাভ কম হবে না।

Share this news