শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের অভাব আর আতঙ্ক

Date: 2023-03-17 21:00:12
শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের অভাব আর আতঙ্ক
১৬৯টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস ফিরিয়ে আনা, আর ‘মার্চ থেকে শেয়ারবাজার ভালো হবে’বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি চেয়ারম্যানের আশাবাদের পর স্বস্তিকর একটি সপ্তাহ পার করে ফের একটি অস্বস্তিকর সপ্তাহ দেখল বিনিয়োগকারীরা। বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন সূচক বেড়ে শেষ হলেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিন্দুমাত্র উচ্ছ্বাস নেই। এই সপ্তাহের পাঁচটি কর্মদিবসে দুই দিন সূচক সামান্য বাড়লেও বাকি তিন দিন পতন দেখেছে।শেয়ারবাজারে চাহিদা ও যোগানে একটি ফারাক রয়ে গেছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নেই। ব্যক্তিশ্রেণির ছোট বিনিয়োগকারী দিয়ে আর কয়দিন চলবে? এখনকার পরিস্থিতি এমন যে, বাতাস হলেও মার্কেট পড়ে। আমেরিকায় ব্যাংক ধসে পড়লে এখানে বাজার পড়ে। সারা বিশ্বের কোনো নেতিবাচক পরিস্থিতি থাকলেও এখানে এর প্রভাব পড়ে। কিন্তু বিশ্বে যখন শেয়ারবাজার বাড়ে, তখন বাংলাদেশে আর বাড়ে না বলে জানিয়েছেন ব্র্যাক ইপিএলের সাবেক গবেষণা প্রধান দেবব্রত কুমার সরকার।আগের সপ্তাহ ‘ভালো’করার পরও চলতি সপ্তাহে শেয়ারবাজারে এমন আচরণের পেছনে বিনিয়োগকারীদের একটি উৎকণ্ঠা কাজ করেছে মনে করে তিনি বলেন, একটা পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয়েছে সিকিউরিটিজ আইন আপডেট হবে। কারসাজির জরিমানা বাড়বে। কিন্তু এটা তো প্রবলেম না। তো প্যানিকড হওয়ারও কিছু নাই। কেউ কারচুপি করলে সাজা পাবে। যে পরিমাণ টাকা তারা আয় করেছে, সেই পরিমাণ জরিমানা আদায় করা হবে।কিন্তু গত এক বছরে মার্কেটের রিটার্ন তো নেগেটিভ। কারচুপি করবে কিভাবে? আর অনেক সময় কেউ কেউ অনেক এগ্রেসিভ হয়ে যায়। রেগুলেটরদের কাজই তো সতর্ক করা। তাও না মানলে আইন তো থাকতে হবে। সেটা নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই।বিদায়ী সপ্তাহের শেয়ারবাজার পর্যালোচনা:বিদায়ী সপ্তাহে সূচকের পতনে টাকার পরিমাণে লেনদেনও কমেছে। সপ্তাহটিতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। আর সপ্তাহটিতে ৩ হাজার ৬৯৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা বাজার মূলধন কমেছে।বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৮৯৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকায়। যা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯১ কোটি ৫৯ লাখ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন ৩ হাজার ৬৯৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা কমেছে।বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে ২ হাজার ৫৪০ কোটি ১০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যার পরিমাণ আগের সপ্তাহে হয়েছিল ২ হাজার ৫৮৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন ৪৪ কোটি ৮৭ লাখ কমেছে।সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২২০ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৫৬ পয়েন্টে এবং ২ হাজার ২১৮ পয়েন্টে।বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭৮টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫টির , কমেছে ১৪১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২২টির শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ টাকার। যার পরিমাণ আগের সপ্তাহে ছিল ৬৩ কোটি ৮ লাখ টাকার। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ৫কোটি ৯৪ লাখ টাকার। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২৬৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৮টির দর বেড়েছে, ৮৩টির দর কমেছে এবং ১৬৫ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

Share this news