শেয়ারবাজারে চলছে উত্থান-পতন খেলা

শেয়ারবাজারে চলছে সূচকের উত্থান-পতন খেলা। শুরু থেকে দিনভর চলে সূচকের টানাটানি। শুরু যেভাবে হয়, শেষ সেভাবে হয় না। অস্থিরতার মধ্যে দিনভর চলছে লেনদেন। এতে শেয়ারবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা আরও গভীর হচ্ছে।আজ সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবারও একই দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। আজ প্রথম আধা ঘন্টার মধ্যে সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩৭ পয়েন্ট বাড়ে। এরপর পরের আধা ঘন্টায় সূচক কমে আগের দিনের কাছাকাছি চলে আসে। এই সময়ে লেনদেন দেখে মনে হচ্ছিল, আগের দুই দিনের মতো আজও সূচক নেগেটিভ হবে। তখন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয় বড় পতনের। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই সূচক আবার বাড়তে থাকে।লেনদেনের তিন ঘন্টা পর সূচক বেড়ে দিনের সর্বোচ্চ অবস্থায় স্থান নেয়। এই সময়ে সূচকের উত্থান হয় প্রায় ৪০ পয়েন্ট। কিন্তু সেটিও বেশিক্ষণ টিকেনি। সূচক আবারও নামতে থাকে। দুপুর দেড়টার পর সূচক আগের দিনেরও নিচে নেমে যায়। কিছুক্ষণ পর ফের উঠতে থাকে। দিনশেষে সূচকের উঠা স্থির হয় সোয়া ৯ পয়েন্টে।চলতি সপ্তাহে প্রথম দুই দিন পতনের পর আজ সূচক কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। তারপরও অস্বাভাবিক আচরণ থেকে রেহাই মিলেনি। গত কিছুদিন কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারে ঘুরেফিরে চলেছে অস্বাভাবিক আচরণ। আজ দৃশ্যপট বদলেছে। আজ দুর্বল, লোকসানি ও বন্ধ থাকা কোম্পানির শেয়ারে ছিল অস্বাভাবিক আচরণ।আজ সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির প্রথম দুটি হলো সোনারগাঁ টেক্সটাইল ও জুট স্পিনার্স। কোম্পানি দুটি বছরের পর বছর যাবত বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত করছে। জুট স্পিনার্স লোকসানের কারণে ২০১৩ সাল থেকে বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না। সোনারগাঁ টেক্সটাইল ২০১২ সালের পর ২০১৯ সালে কোনো রকমে ৩ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। তারপর থেকে ফের ডিভিডেন্ড শুন্যের বছর।দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে থাকা আর্থিক খাতের ইউনিয়ন ক্যাপিটাল ২০১৮ সাল থেকে বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না। কোম্পানিটি চলতি বছর মুনাফায় ফিরলেও ডিভিডেন্ড দিতে সক্ষম হবে না। কারণ এর পুঞ্জিভূত লোকসান আকাশচুম্বি।অন্য একটি কোম্পানি বিডি ওয়েল্ডিং গত এক দশকের মধ্যে দুইবারই সামান্য মুনাফা করে বিনিয়োগকারীদের নামমাত্র ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। গত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি ১৩ টাকার বেশি লোকসান দেয়ার পর চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কিছুটা মুনাফা করেছে। আাজ এমন আরও বহু লোকসানি, বন্ধ বা কোম্পানির রমরমা অবস্থা দেখা গেছে।মঙ্গলবার বাজার পরিস্থিতি:ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আজ ৯.২৮ পয়েন্ট বা ০.১৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৩৭.৫৯ পয়েন্টে।ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২.৫০ পয়েন্ট বা ০.১৭ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩.১১ পয়েন্ট বা ০.১৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪২৬.৯৫ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩৫৩.৫১ পয়েন্টে।টাকার পরিমাণে ডিএসইতে আজ লেনদেন এক হাজার ৪৮০ কোটি ৭ লাখ টাকার। যা আগের দিন থেকে ১১৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৩৬০ কোটি ৭৪ লাখ টাকার।ডিএসইতে আজ ৩৭৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১২৯টির বা ৩৪.২২ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ১০৮টির বা ২৮.৬৫ শতাংশের এবং ১৪০টির বা ৩৭.১৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।দেশের দ্বিতীয় শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৪.২৬ পয়েন্ট বা ০.১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ২৩২.৮৬ পয়েন্টে।এদিন সিএসইতে ২৮৮টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১১টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮৫টির আর ৯২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। আজ সিএসইতে ৩৫ কোটি ০২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।