শেয়ারবাজারে চলছে টম অ্যান্ড জেরির খেলা!

Date: 2023-03-28 01:00:21
শেয়ারবাজারে চলছে টম অ্যান্ড জেরির খেলা!
শেয়ারবাজারে এক দিন বাড়ে তো অন্যদিন পতন। যেদিন সূচক বাড়ে সেদিন লেনদেন থাকে তলানিতে। আবার যেদিন লেনদেন বাড়ে সেদিন সূচক থাকে তলানিতে। তবে কোনো কোনো দিন লেনদেন ও সূচক উভয় হাতে হাত ধরে পেছনের দিকে হাঁটছে।বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজারে এখন চলছে টম অ্যান্ড জেরির খেলা। কৃত্রিমভাবে এখন শেয়ারবাজারকে জিইয়ে রাখার হয়েছে। এই অবস্থা চলছে গত প্রায় তিন বছর যাবত। যার ফলে বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বাজারসংশ্লিষ্ট সবাই বাজারের ভবিষ্যত নিয়ে এখন সন্দিহান।এদিকে, ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে দেখা দিয়ে বড় অনিশ্চতয়তা। অনেক ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না। তারা বলছেন, বাজারের এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গণহারে ছাটাই শুরু হবে।ব্রোকারেজ হাউজের মালিকরা বলছেন, বাজারের লেনদেন এখন তিন শ কোটির ঘরে নেমে গেছে। এতে অনেক ব্রোকারেজ হাউজের লেনদেন ২৫-৩০ লাখে নেমে গেছে। যার ফলে অফিস চালানোই এখন দায় হয়ে পড়েছে।তারা বলছেন, যেসব ব্রোকারেজ হাউজের ঢাকার বাইরে শাখা অফিস রয়েছে, তাদের অবস্থা আরও শোচনীয়। কারণ ঢাকার বাইরে ব্রোকারেজ হাউজের শাখাগুলোতে লেনদেন এখন শুন্যের কোঠায় নেমে গেছে। কোনো ব্রোকারেজ হাউজের শাখা অফিস বন্দ করে দেওয়ার অবস্থায় চলে গেছে। সব মিলিয়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর এখন নাভিশ্বাসের উপক্রম হয়েছে।এদিকে, শেয়ারবাজারে একটি গোষ্টি ফ্লোর প্রাইস তোলার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উপর অনবরত চাপ প্রয়োগ করে চলেছে। বাজারের এই ভীতিকর অবস্থার জন্য তাদের দিকেই বিনিয়োগকারীদের অভিযোগের তীর তাক করে আছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু লোকের হাত অনেক লম্বা। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু সরাসরি বলতে পারছে না। বাজার সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ওই দুষ্ট চক্রের কাছে অনেক সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থাও চুপসে যায়।অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিও জেদ ধরে বসে আছে বলে বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করছেন। তাদের মতে, বিএসইসি যদি ওই গ্রুপকে ম্যানেজ করতে পারতো, তাহলে বাজার ঠিকই দৈন্যদশা কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থার দিকে অগ্রসর হতো। কারণ ওই চক্রটি ইচ্ছে করলেই বাজারের স্পন্দন ফিরিয়ে আনতে পারে।আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন ৩০০ কোটির টাকার নিচে নেমে গেছে। আজ ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৭২ কোটি টাকা, যা গতকালের চেয়ে ১৮ শতাংশ বা ৪৬ কোটি টাকা কম। গতকাল সোমবার লেনদেন ৩০০ কোটি ছাড়িয়েছিল।বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, লেনদেন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তা। বাজারের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারেই কোনো লেনদেন হচ্ছে না। কারণ, সেগুলো শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে।ডিএসইতে মঙ্গলবার লেনদেন হওয়া ২৮৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০১টিরই শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় দামের কোনো হেরফের হয়নি। ফলে এসব শেয়ারের ইতিবাচক কোনো প্রভাবই ছিল না সূচকে। এছাড়া লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১৮টির। আর কমেছে ৫৬টির। অর্থাৎ হাতে গোনা যে কয়টা প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের হাতবদল হয়েছে, তার বেশির ভাগেরই দাম কমেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সূচকে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১ পয়েন্ট কমে আজ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৯৩ পয়েন্টে।

Share this news