শেয়ারবাজারে বড় পতনবিএসইসি-ডিএসইর অর্ন্তদ্বন্দ্ব, বলির পাঠা বিনিয়োগকারীরা

আগেরদিন বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছিল ৪১ পয়েন্টের বেশি। এমন পতনের জন্য বিনিয়োগকারীরা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ধারাবাহিক নেতিবাচক কর্মকান্ডের দিকে আঙ্গুল তুলেছিল।বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বিএসইসির নতুন কমিশন দায়িত্ব নিয়েই বড় বড় বিনিয়োগকারীদের, যারা বাজারের নিয়ন্ত্রক, তাদের আটকানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তাদের ধারণা, যারা এতোদিন লুটপাট করেছে, তাদের শায়েস্তা করতে পারলেই শেয়ারবাজার টুপ করে ফুলে ফেঁপে উঠবে। আসলে শেয়ারবাজার সম্পর্কে যাদের সম্যক অভিজ্ঞতা নেই, তাদের এমন ধারণা অমুলক নয়।আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আরও বড় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আজ ধারাবাহিক পতনে ডিএসইর সূচক কমেছে ৯৭ পয়েন্টের বেশি। এর কারণ হলো, গতকাল বুধবার ডিএসই হঠাৎ করে ২৮টি কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।ডিএসইর ওই সিদ্ধানের পর আজ লেনদেনের শুরুতেই কোম্পানিগুলোর ক্রেতাহীন হয়ে পড়ে। এত শুরুতেই বাজারজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। এরপর অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারও দলবেঁধে নামতে থাকে। এক পর্যায়ে ডিএসইর সূচক ১২০ পয়েন্ট উধাও হয়ে যায়। তবে শেষবেলায় পতনের ঝাপটা কিছুটা কমে ৯৮ পয়েন্টের নিচে এসে স্থির হয়।বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশজুড়ে শ্রমিক অসন্তোষ ও আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতিতে বর্তমানে শেয়ারবাজার এমনিতেই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এমন পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা অন্ধের মতো শেয়ারবাজারে বড় বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে একের পর এক শাস্তি আরোপ করে চলেছে। যে কারণে চাঙ্গাভাবে থাকা শেয়ারবাজার হঠাৎ অস্থিরতায় পড়ে যায়।অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে ডিএসইর টানাপোড়েনের ডালপালাও ক্রমশ বাড়তে থাকে। বর্তমান কমিশন এসেই ডিএসইর সঙ্গে একটা দৃশ্যমান ব্যবধান তৈরি করে ফেলে। যার কারণে ডিএসইতে যারা বসে আছেন, তারা ক্রমেই বর্তমান কমিশনের পক্ষ ত্যাগ করছেন। এর প্রমাণ মিলেছে গতকাল বুধবার শেষবেলায় হঠাৎ করে ২৮টি কোম্পানির শেয়ার জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত।বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া আরও কিছুদিন পরেও করতে পারতে ডিএসই। এতে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেতো না। বাজারের এমন ভঙ্গুর অবস্থায় তাদের এটা করাটা কোনভাবে বাঞ্চিত ছিল না। বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বাজারকে চাপে ফেলার জন্যই ডিএসই এটা করেছে। বিএসইসি ও ডিএসইস অর্ন্তদ্বন্দ্বের বলি হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তারা দিনে দিনে শেয়ারবাজারে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে।