শেয়ারবাজার থেকে অর্থ লুটেরাদের মধ্যে আড়ালে ফজলুর রহমান

দেশে দ্বিতীয়বার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে শেখ হাসিনার সরকার। ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে মহা ধস হয়। এরপর বেশ কয়েকবার শেয়ারবাজারে বড় বড় পতনের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রত্যাক্ষ ও পরোক্ষভাবে শেয়ারবাজার থেকে সাড়ে ২৬ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। তবে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ লুটপাটকারীদের মধ্যে আড়ালে রয়ে গেছেন এবি ব্যাংক সিকিউরিটিজের বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান। সালমান এফ রহমানের এই লুটপাটের অন্যমত সহযোগী ছিলেন ফজলুর রহমান।তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ইব্রাহীম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে শেয়ারবাজারে শীর্ষ লুটপাটের যে তালিকা দেয়া হয়েছিল- সেখানেও ফজলুর রহমানের নাম রয়েছে। আরব আমিরাতে একটি অফশোর প্রতিষ্ঠান তৈরি করে এবি ব্যাংকের ১৬৫ কোটি টাকা পাচার করে আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয় ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে।ফজলুর রহমান অদৃশ্য ক্ষমতাবলে সবার ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। শেয়ারবাজারে সালমানের ডান হাত বলে খ্যাত এই ফজলুর রহমানের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করার উদ্যোগ নেয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ফজলুর রহমানের নামে-বেনামে রয়েছে শত শত কোটি টাকা। দেশে বিদেশে রয়েছে অঢেল সম্পদ এবং বাড়ি গাড়ি। যার অধিকাংশই শেয়ারবাজার থেকে অবৈধভাবে লুটের টাকায় করা।সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হতে হলে তাকে কমপক্ষে ১৫ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অদৃশ্য ক্ষমতাবলে ২০১২ সালে ফজলুর রহমানকে এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। সে হিসেবে তার সাড়ে ১১ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।ফজলুর রহমান এবি ব্যাংকে ডিএমডি পদে থাকাকালে বিনিয়োগ ব্যাংকিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারের ধসের জন্য যে কয়টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে- তার মধ্যে এবি ব্যাংক একটি। শেয়ারবাজার উত্থান পতনে ফজলুর রহমানের বড় ধরনের ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।২০১০-১১ সালে শেয়ার বাজার ধসের পর এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। কমিটির প্রধান ছিলেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। সেই রিপোর্টে শেয়ারবাজারে ফিক্সড প্রাইস, বুক-বিল্ডিং, রাইট শেয়ার, ডিরেক্ট লিস্টিং, সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন, প্রেফারেন্স শেয়ারসহ সব ক্ষেত্রেই অনিয়ম হওয়ার এবং এর সঙ্গে সালমান এফ রহমান, ফজলুর রহমানসহ ৩০ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। তাই খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ সেই রিপোর্টে এদের কাছ থেকে শেয়ারবাজারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।