শেয়ার কেলেঙ্কারির বিচারাধীন ১৭ মামলা পুনরুজ্জীবিত করছে বিএসইসি

Date: 2023-10-28 06:00:08
শেয়ার কেলেঙ্কারির বিচারাধীন ১৭ মামলা পুনরুজ্জীবিত করছে বিএসইসি
দুই দশকের বেশি সময় পর ১৯৯৬ এবং ২০১০ সালের শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারিতে দায়ের করা ১৭টি মামলা পুনরুজ্জীবন করছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।বিএসইসির আইন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মোঃ মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর জারি করা চিঠিতে বিএসইসি ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির আইনজীবীদের মামলাগুলো শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।এরই মধ্যে মামলাগুলোর আপগ্রেডেড তথ্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।কার্যধারায় ১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার চার মাসের মধ্যে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ কেলেঙ্কারি ঘটে। অসাধু একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।বিএসইসি ১৯৯৬ সালে প্রতারণামূলক উপায়ে শেয়ারের মূল্য হেরফের অভিযোগে ৩৮ জন ব্যক্তি, আটটি তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং ছয়টি ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ ব্যবধানের পরে বিএসইসি এখন এই নিষ্ক্রিয় মামলাগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে এগিয়ে এসেছে।১৫টি মামলার মধ্যে তিনটি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে। রূপন অয়েল অ্যান্ড ফিডস লিমিটেডের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলা ২০১১ সালের ৩০ মার্চ আসামি নূরন্নবী মারা যাওয়ায় নিষ্পত্তি করা হয়। দায়রা জজ আদালত সি ফুডস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং অন্যদের এবং অ্যাপেক্স ফুডস লিমিটেড এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও দুটি মামলায় আসামিদের খালাস দিয়েছেন।পরে দায়রা জজ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দুটি ফৌজদারি রিভিশন পিটিশন দাখিল করে বিএসইসি। বিএসইসি তাদের আইনজীবীদের হাইকোর্টে মামলার শুনানির জন্য উদ্যোগ নিতে বলেছে।ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে চারটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল একটি মামলায় আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে এবং তিনটি মামলায় আসামিদের খালাস দেয়। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোঃ মাসকুর রসুল ও ইফতেখার মোহাম্মদ পলাতক রয়েছেন।বিশেষ ট্রাইব্যুনাল থেকে আসামি খালাস পাওয়া বাকি তিনটি মামলায় বিএসইসি হাইকোর্টে ফৌজদারি আপিল দায়ের করে। চলতি বছরের ২৮ আগস্ট কমিশন তার আইনজীবীদের হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলাগুলোর শুনানির উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেছে।শাইনপুকুর হোল্ডিংস লিমিটেড, সালমান এফ রহমান, আসিফ এফ রহমান, এবি সিদ্দিকুর রহমান, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ডিএইচ খান, একেএম শামসুদ্দোহা এবং দোহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে দায়ের করা তিনটি মামলা ২০১২ এবং ২০১৭ সালে হাইকোর্ট খারিজ করে দেয়। পরে, বিএসইসি হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেছে।ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং রিজওয়ান বিন ফারুক, এসইএস কোম্পানি লিমিটেড, রুনা আলম, সাবেত সিদ্দিক, মশিউর রহমান ও অনু জাগিরদার, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইমতিয়াজ হোসেন অ্যান্ড কোম্পানির বিরুদ্ধে দায়ের করা বাকি পাঁচটি মামলার শুনানির ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।২০১০ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে দুটি মামলা দায়ের করেছিল বিএসইসি। হাইকোর্ট মামলাগুলির বিচার কার্যক্রম স্থগিত করে দিয়েছেন।দীর্ঘ ২৭ বছর অতিবাহিতহওয়ায় মামলাগুলোর বিচার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। বিএসইসি এখন মামলাগুলো পুনরুত্থানের উদ্যোগ নিচ্ছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। তবে এতকাল অতিবাহিত হওয়ার পর মামলাগুলোপুনরুজ্জীবনের বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বিস্ময় প্রকাশ করছেন। তাঁরা বলছেন, মামলাগুলোপুনরুজ্জীবনকরলে কী শেয়ারবাজারের জন্য আদৌ কোনো ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে? সূত্র- দ্যা ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস

Share this news