সাত বছরে শেয়ারবাজারে নারী বিনিয়োগকারী কমেছে ৫৮ শতাংশ

বাংলাদেশের শেয়ারবাজার থেকে গত সাত বছরে নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৫৮ শতাংশ। ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের ০৭ আগস্ট পর্যন্ত সিডিবিএল এর সূত্রে জানিয়েছেন ইকোনমিক রিপোর্টারস ফোরাম (ইআরএফ) এর সাবেক প্রেসিডেন্ট শারমীন রিনভী।মঙ্গলবার (০৮ আগস্ট) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটস (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত `পুঁজিবাজারে নারী অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে তিনি এ তথ্য তুলে ধরেন।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়েত উল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ।তিনি বলেন, ২০১০ সালে নারী বিনিয়োগকারী ৮ লাখ ছাড়িয়েছিলো। কিন্তু সেই সময়ে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বড় ধ্বসের পর ২ লাখ বাজার ছেড়ে চলে যায়।এরপর ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর শেষে নারী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা হয় ৮ লাখ ৬৫ হাজার ২৫০ জন। ২০১৭ সালে কমে ৭ লাখ ৯৬ হাজারে নেমে আসে। ২০১৮ সালে কমে ৭ লাখ ৩৩ হাজারে নেমে আসে।২০১৯ সালে কিছুটা বেড়ে নারী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৩ হাজারে। ২০২০ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৪ হাজারে। আবারও ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৭ হাজারে। ২০২২ সালে আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১৪ হাজারে। সবশেষে ২০২৩ সালের ৭ আগষ্ট পর্যন্ত নারী- বিও হিসাব চালু রয়েছে ৪ লাখ ২২ হাজার ৫১৬টি।অর্থাৎ গত সাত বছরে শেয়ারবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা কমেছে ৪ লাখ ৪৩ হাজার। যা সাত বছরের মধ্যে মোট নারী বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৫৮ শতাংশশারমীন রিনভী বলেন, করোনার মধ্যেও ভারতে নারীরা মিউচুয়াল ফান্ডকে বিনিয়োগের আদর্শ ক্ষেত্র হিসেবে বেঁচে নিয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশের নারীরা।তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের জনশুমারী মতে দেশে মোট নারীর সংখ্যা ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জন। আর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ।শারমীন রিনভী নারী বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে বলেন, নারীরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার আগে প্রশিক্ষণের জন্য বিএসইসি নিয়মিত প্রশিক্ষন কর্মশালা চালু করেছে। ঘরে বসেই ব্রোকার হাউজে বিও একাউন্ট খোলা, বিএসইসির ইতিহাসে প্রথমবার নারী কমিশনার ডা. রুমানা ইসলামকে নিয়োগ, দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই নারী পরিচালক নিয়োগ দেওয়াসহ অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশী নারী, অন্যদিকে প্রকৃতিগতভাবেই নারীরা ধৈর্যশীল ও বাস্তববাদী। তাই শেয়ারবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো গেলে শুধু লিঙ্গ সমতা অর্জন, নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে তা নয় সুসংহত, স্থিতিশীল ও দক্ষ শেয়ারবাজার সৃষ্টি হবে।