ঋণ পরিশোধে শেয়ারবাজারে এসে সহযোগিতে অর্থ পাচার
ব্যবসা সম্প্রসারণ ও ঋণ পরিশোধে শেয়ারবাজার থেকে ২০১৮ সালে ৮০ কোটি উত্তোলন করে আমান কটন ফাইব্রাস। অথচ এই কোম্পানিটি থেকেই সহযোগি কোম্পানিতে ঋণের নামে ২৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা পাচাঁর করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নোটিফিকেশন নং বিএসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০৯-১৩২/২/এডমিন/১০৩ অনুযায়ি অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এছাড়া ওই ঋণের বিষয়ে কোন প্রমাণাদি পায়নি নিরীক্ষক।কোম্পানিটির ২০২১-২২ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় এই তথ্য জানিয়েছেন নিরীক্ষক।এর আগে ২০১৮ সালে আমান কটনের জন্য বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৮০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে ১০ কোটি ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করা হবে বলে প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করা হয়। অথচ পরিচালকদের ব্যক্তিগত স্বার্থে আমান কটন থেকে এর চেয়ে বেশি সহযোগিতে দিয়েছে।এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জমি কেনার নামে অগ্রিম হিসাবে ১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা প্রদান করে রেখেছে বলে আর্থিক হিসাবে তথ্য দিয়েছে। এছাড়া ওই জমি মাটিভরাট করে উন্নয়নের জন্য ৯২ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে রেখেছে। যা কয়েক বছর ধরে দেখিয়ে আসছে আমান কটন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জমি কোম্পানির নামে আসছে না। এ জাতীয় টাকা কোম্পানি কর্তৃপক্ষ নিজেরা ব্যবহার করে অগ্রিম হিসাবে প্রদান দেখিয়ে থাকে।অনেক আশার আলো দেখিয়ে শেয়ারবাজারে আসা আমান কটন কর্তৃপক্ষ আইপিও ফান্ড ব্যবহার করতে পারছে না। আইপিওর টাকা ২০১৯ সালের ৫ আগস্টের মধ্যে ব্যবহার সম্পন্ন করবে বলে প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করেছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের জানুয়ারিতেও আইপিওর ৭১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ফান্ড অব্যবহৃত রয়েছে।এদিকে শ্রম আইন মানছে না আমান কটন কর্তৃপক্ষ। নিরীক্ষক জানিয়েছেন, ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ি, প্রতি বছর নিট মুনাফার ৫% ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) গঠন করা এবং তা কর্মীদের মধ্যে বিতরন করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমান কটন কর্তৃপক্ষ ফান্ড গঠন করলেও বিতরন করে না।আমান কটন আইপিওতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কাট-অফ প্রাইস ৪০ টাকা হিসেবে প্রতিটি শেয়ার ইস্যু করে। আর সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৬ টাকা করে ইস্যু করে। বর্তমানে এই শেয়ারটির দর ফ্লোর প্রাইস ২৬.৫০ টাকায় আটকে আছে।উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আমান কটনের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১০০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৫০.৪২ শতাংশ।