রানার অটোমোবাইলসের ব্যবসা কমেছে ৪৩ শতাংশ

Date: 2023-04-19 21:00:14
রানার অটোমোবাইলসের ব্যবসা কমেছে ৪৩ শতাংশ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি রানার অটোমোবাইলস পিএলসির ব্যবসা চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ভালো যায়নি। আলোচ্য সময়ে আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির ব্যবসা ৪৩ শতাংশ কমেছে। এর প্রভাবে লোকসান গুনতে হয়েছে কোম্পানিটিকে।অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যবসা থেকে ১৭৪ কোটি টাকা আয় করেছে রানার অটোমোবাইলস। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৩০৩ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় কমেছে ১২৯ কোটি টাকা বা ৪৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী ১৭ কোটি টাকা নিট লোকসান হয়েছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রায় ১৬ কোটি টাকা নিট মুনাফা হয়েছিল। চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৪১ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৭৮ পয়সা।এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) রানার অটোমোবাইলসের আয় হয়েছে ৫৪৯ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৮৫৩ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৫২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ৪৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ৪ টাকা ৩১ পয়সা লোকসান হয়েছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ২ টাকা ২৭ পয়সা। গত ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬১ টাকা ২০ পয়সায়। সাপ্লাই চেইনে বাধাগ্রস্ত হওয়া ও বিভিন্ন ধরনের ব্যয় বৃদ্ধির চাপে চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধেও (জুলাই-ডিসেম্বর) বড় ধরনের লোকসানে পড়েছিল রানার অটোমোবাইলস। চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ১৩ পয়সায়। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছিল ১ টাকা ৪৯ পয়সা। প্রতিবেদন অনুসারে, রানার অটোমোবাইলসের চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধের লোকসানের বড় অংশই এসেছে দ্বিতীয় প্রান্তিকে। প্রথমার্ধের ৩ টাকা ১৩ পয়সা শেয়ারপ্রতি সমন্বিত লোকসানের ২ টাকা ৮ পয়সা যুক্ত হয়েছে দ্বিতীয় প্রান্তিকে। আগের হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় হয়েছিল ৯৬ পয়সা। সদ্যসমাপ্ত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬২ টাকা ৮১ পয়সায়। দ্বিতীয় প্রান্তিকে বড় লোকসান হওয়ার কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, আলোচ্য সময়ে তাদের সাপ্লাই চেইনে বিঘ্ন ঘটেছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি ও ডলারের বিপরীতের টাকার অবমূল্যায়জনিত কারণেও তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সার্বিকভাবে সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিরতা তাদের পণ্য উপকরণের ব্যয় অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। এসব কারণে আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটিকে লোকসান গুনতে হয়েছে।৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য মোট ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে রানার অটোমোবাইলসের পরিচালনা পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে রানার অটোমোবাইলসের সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৪০ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২ টাকা ৭০ পয়সা। আগামী ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৬৬ টাকা ৫০ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৬৫ টাকা ১৬ পয়সায়।৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে রানার অটোমোবাইলস। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস ছিল ২ টাকা ৭০ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ টাকা ৯৭ পয়সা। সর্বশেষ ক্রেডিট রেটিং অনুসারে, রানার অটোমোবাইলসের ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘এ ওয়ান’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-থ্রি’। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকঋণ ও রেটিং প্রকাশের দিন পর্যন্ত কোম্পানিটির অন্যান্য প্রাসঙ্গিক গুণগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ (সিআরএবি)।২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৪৩৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি ৩৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৩২। এর মধ্যে ৪১ দশমিক ২৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৫ দশমিক ৪৬ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে বাকি ২৩ দশমিক ৩১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।ডিএসইতে সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৪৮ টাকা ৪০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৪৭ টাকা ৪০ ও ৫৬ টাকা ৮০ পয়সা।

Share this news