পুঁজিবাজারের জন্য উদ্ভাবনী পণ্য ও গুজব প্রতিরোধের উপায় খোঁজার তাগিদ

গবেষণার মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারের জন্য উদ্ভাবনী পণ্য ও গুজব প্রতিরোধের উপায় খুঁজতে বললেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটস (বিআইসিএম) ও বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম) আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।বিএসইসি চেয়ারম্যানে বলেন, আমাদের আরেকটা জিনিস নিয়ে কাজ করতে হবে, গুজব প্রতিরোধ। একটা ম্যাসেজ কীভাবে বাজারে নিয়ে আসা যায়, প্রচার করা বা দেয়া যায়, সেটা বের করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে মিথ্যা কথা বলে বা মিথ্যা খবর দিয়ে, বাজার ও মানুষকে বিভ্রান্ত করা এবং তাদের আর্থিক ক্ষতি করা হয়। এটা অপরাধের সামিল। এই জিনিসটাকে আমরা কীভাবে অ্যাড্রেস করব, এটা সবার করা দরকার।এটা সামাজিক ব্যাধি আখ্যা দেন শিবলী রুবাইয়াত। বলেন, মানুষকে ভুল তথ্য দিয়ে ভয় দেখিয়ে যেটা হচ্ছে, সেটা সামাজিক অসুখে রূপান্তরিত হয়েছে।তিনি বলেন, এখানে আমাদের একদিকে অপরাধীর জন্য ব্যবস্থা, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকা, এবং কোনো কিছু ক্রস চেক না করে বিশ্বাস করে লস করে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা না ঘটে সেটার জন্য একটা ট্রেনিং প্রোগ্রাম বা এডুকেশনে কাজ শুরু করার সময় হয়ে গেছে।গবেষণার মাধ্যমে নতুন প্রোডাক্ট উদ্ভাবনের ওপর জোর দেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। বলেন, সাস্টেবেল ফাইন্যান্সের যে টুলগুলো নিয়ে কাজ করছি, আরও কিছু নতুন আসছে, পুরোনো কিছু নতুন করে রিভাইভ করছি, রিমডেল করছি সেগুলো আপনারা দেখেন। তবে আপনাদের কাছে আমাদের আশা থাকবে যে, আপনারা কিছু ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট দেবেন, যেটা বাংলাদেশের মার্কেটের জন্য সাসটেননেবল।তিনি বলেন, অ্যাকাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি গবেষণা করে ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট না দেয়, আমরা কিন্তু রেগুলেটর আমাদের কাজ এগুলো না, আমাদের কাজ হচ্ছে প্রোডাক্টগুলো যেগুলো আসবে সেগুলো দেখেশুনে দেয়া, কোম্পানিগুলো যাতে বেনিফিটেড হয়।গবেষণার জন্য তহবিল আছে এবং লাগলে আরও দেয়া হবে বলেও জানান শিবলী রুবাইয়াত। বলেন, আপনাদের কাছে ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট চাই। বাংলাদেশের মার্কেটে বাংলাদেশের মতো করে কী আনব, আগামী ২০, ৩০ বছর টার্গেট করে, সেটিই আশা করব আপনাদের কাছে।বিনিয়োগ শিক্ষার বিষয়টি পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্তির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসিকে অনুরোধ করার কথাও জানান বিএসইসি প্রধান। বলেন, হিউম্যান ক্যাপিটালের অভাব ও চাকরির সুযোগ রয়েছে। সুতরাং এসব স্থানে যদি বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ থেকে এসে যুক্ত হয় তাহলে খুব উপকৃত হবে।বিনিয়োগকারীদের এই ধরনের জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রে বিআইসিএম ও বিএএসএম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলেও জানান তিনি। বলেন, আমি আজকে এফবিসিসিআইয়ের প্রোগ্রামে ছিলাম। সেখানে বন্ড নিয়ে কথা হচ্ছিল। ফাইন্যান্সের অনেক কিছুই জানে না বলে এফবিসিসিআিই স্বীকার করল।তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আমরা একসঙ্গে লং টার্ম ফাইন্যান্সিংয়ের যে সলিউশনগুলো দিচ্ছি, যেটা বিশ্বব্যাপি অনুসরণ করা হয়। এই বিষয়ে কেউই কিছুই জানে না, এফবিসিসিআইও জানে না।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি বলতে আমরা যে বিষয়টা দেখছি, আমাদের দেশে সেটা অনুমিত হয় না। আমরা যে প্রেক্ষাপটে থাকি, সেখানে গভীর তথ্য নিয়ে আলোচনা করার চেয়ে উচিত হবে সাধারণ জিনিসগুলো মানুষের কাছে বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা।তিনি বলেন, বেসিক যে কনসেপ্ট আছে, তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারি, সে বিষয়ে কাজ করতে হবে। অনেক জটিল বিষয় আছে, যারা স্টেকহোল্ডার, সেগুলো তারা শিখবেন। কিন্তু সাধারণ বিষয়গুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এটাই ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসির প্রধান কাজ, সেটাই আমাদের করতে হবে।বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বিএএসএমের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, বিআইসিএমের ফ্যাকাল্টি সুবর্ণ বড়ুয়া বিআইসিএমের সহকারী অধ্যাপক সাফায়েদুজ্জামান খান প্রমুখ।