পুঁজিবাজারে সুশাসন ফিরিয়ে আনুন

Date: 2022-11-22 04:00:16
পুঁজিবাজারে সুশাসন ফিরিয়ে আনুন
বিগত কয়েক মাস থেকে দেশের পুঁজিবাজার ১০-১৫টা কোম্পানির মধ্যে সীমাবদ্ধ। ঐ ১০-১৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লে ইনডেক্স বাড়ে আবার ঐ ১০-১৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে গেলে ইনডেক্স কমে যায়। এই গুটি কয়েক কোম্পানি দিয়ে একটি দেশের পুঁজিবাজার চলতে পারে না। যেমনঃ বিগত কয়েক মাসে ওরিয়ন ইনফিউশনের দাম ৭০ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১০০০ টাকা হয়েছে, এতে কি বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে? না কিছুই হয়নি বরং পুঁজিবাজারের ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।জুলাই মাসের ২৮ তারিখ যখন ফ্লোর প্রাইজ দিয়ে দেয়া হয় তখন মাত্র ৬০-৭০টি কোম্পানি ফ্লোর প্রাইজে ছিল। পরবর্তীতে পুঁজিবাজারকে যখন ১০-১৫ টি কোম্পানির মধ্যে বাক্স বন্দি করা হয় তখন বাজারে ফ্লোর প্রাইজে আটকে থাকা কোম্পানির সংখ্যা বাড়তে থাকে। কারন ফ্লোর প্রাইজের কাছাকাছি অবস্থান করা কোম্পানির শেয়ার গুলো বিক্রি করে ঐ ১০-১৫টি কোম্পানির শেয়ার কিনতে বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করা হয়েছে। যার ফলাফল আমরা দেখতে পাচ্ছি, প্রায় ৩০০ কোম্পানি বর্তমানে ফ্লোর প্রাইজে আটকে রয়েছে।ওরিয়ন ইনফিউশন ৭০ টাকা থেকে যখন ২০০ টাকা গিয়েছিল সেই সময় যদি এর লেনদেন বন্ধ করে দেয়া হতো তাহলে বাজার আর ১০-১৫টি কোম্পানিতে বাক্স বন্দি হতো না। নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সদিচ্ছার ঘাটতিতে আজ এতগুলো কোম্পানি ফ্লোর প্রাইজে। বর্তমানে অনেক কোম্পানির শেয়ার বেশ আকর্ষণীয় দামে ফ্লোর প্রাইজে পড়ে আছে। দরকার শুধু নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সদিচ্ছার। নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সদিচ্ছা থাকলে বিনিয়োগকারীরা ফ্লোর প্রাইজে শেয়ার কিনতে উৎসাহিত হবে। সেক্ষেত্রে ৯০% শেয়ার তার ফ্লোর প্রাইজ ভেঙ্গে উপরে উঠে যাবে। পুঁজিবাজারে ভারসাম্য ফিরে আসবে।গত ২ বছরে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা OTC, ATB, SME মার্কেট এবং দুর্বল কোম্পানি গুলো নিয়ে কাজ করেছে। অথচ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার উচিত ছিল ভালো কোম্পানি গুলোকে নার্সিং করা। আজ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার দুর্বলতায় ভালো এবং প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি গুলো শেয়ার হোল্ডারদের সাথে প্রতারণা করে চলেছে। যে যার মতন মনগড়া EPS দিয়ে যাচ্ছে। বেশির ভাগ নাম করা প্রতিষ্ঠান গুলো এবার নেগেটিভ EPS দিয়েছে।বিএসইসির চেয়ারম্যান নুতন দায়িত্ব নেয়ার পর সুশাসন প্রতিষ্ঠার কথা বললেও এখন সেই সুশাসন আমাবস্যার চাঁদ হয়ে গেছে। এই যে ভালো ভালো কোম্পানি গুলো অস্বাভাবিক ভাবে তাদের আয় কম দেখাছে এই বিষয়ে বিএসইসির কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। নতুন অনেক কোম্পানি বাজারে আসার পর ইস্যু মূল্যের নিচে চলে গেছে, কেন চলে যাচ্ছে এই বিষয়ে বিএসইসি কোন উদ্যোগ দেখেছেন কি? ২ বছর আগে বিএসইসির চেয়ারম্যান নিজে বাই ব্যাক আইন বাস্তবায়নের কথা বললেও আজ পর্যন্ত এই নিয়ে আর কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি।পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য মতে দেখা গেছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার অনেকেই জুয়াড়িদের সাথে হাত মিলিয়ে তাদের সুবিধা করে দিচ্ছে। এভাবে একটি দেশের পুঁজিবাজার চলতে পারেনা। সুশাসনের বাণী আজ নিভৃতে কাঁদে। তাই একটি কথাই বলবো, পুঁজিবাজারে সুশাসন ফিরিয়ে আনুন অন্যথায় পদত্যাগ করুন।

Share this news