পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিএসইসি ব্যবসায়ীদের সহায়তা করে —বিএসইসির অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ব্যবসায়ীদেরও সহায়তা করে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কার্নিভাল হলে আয়োজিত বিএসইসির ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।মন্ত্রী বলেন, ‘বিএসইসি আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেট যেমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, তেমনি ব্যবসায়ীদেরও বিভিন্নভাবে সহায়তা করে। এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা সবসময় উপকৃত হচ্ছেন। সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের জন্য সাসটেইনেবল প্লেস দরকার হয়। আমি মনে করি, সাসটেইনেবল প্লেস তৈরির জন্য একটি সাসটেইনেবল সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ দরকার।’ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বলেন, ‘পুঁজিবাজার হলো এমন একটি বাজার, যেখানে পুঁজি কেনাবেচা হয়। যারা বিনিয়োগ করতে চান তারা এ বাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করেন। আর যারা পুঁজি দিয়ে তাদের সহায়তা করেন তারা তাদের অর্থের বিনিময়ে লাভ করতে চান। এভাবে দেশের উন্নয়নের জন্য যে বিনিয়োগের দরকার তার জোগান দেয়াটাই হলো সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাজ।’তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন অনেক উন্নত একটা পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ বেড়েছে। জীবনযাপনের মানোন্নয়ন হয়েছে, শিক্ষার মানোন্নয়ন হয়েছে। দারিদ্র্য কমে এসেছে। এখন সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার সেটা হলো বিনিয়োগ। এ বিনিয়োগের জোগান আসতে হবে পুঁজিবাজার থেকে।’ সূচনা বক্তব্যে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজকে যারা পুরস্কার গ্রহণ করবেন তারা গর্বিত হবেন। তারা গত অর্থবছরের জন্য এ পুরস্কার পাবেন। এছাড়া সুদ্ধাচার পুরস্কার দেয়ার ফলে অফিসের কর্মীদের মধ্যে কাজে উৎসাহ বাড়বে। সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা ক্যাপিটাল মার্কেটকে এগিয়ে নিতে চাই। এ পুরস্কার দেয়ার ফলে সেবার মান বাড়বে। এসব উদ্যোগ চালু রাখবে বিএসইসি। সামনের বছরগুলোতেও এ পুরস্কার দেয়া হবে।’এবারের অনুষ্ঠানে বিএসইসি মোট নয়টি মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান বা ইন্টারমিডিয়ারিজদের ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পুরস্কার’ প্রদান করেছে। গত বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্টক ডিলার ও স্টক ব্রোকার ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান নির্বাচনের ভিত্তিতে মোট পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এছাড়া মার্চেন্ট ব্যাংক ক্যাটাগরি ও সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি ক্যাটাগরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান নির্বাচনের ভিত্তিতে মোট চারটি প্রতিষ্ঠানকে পুরুস্কৃত করা হয়েছে। এ দুই ক্যাটাগরিতে তৃতীয় পরস্কার প্রদানের জন্য যোগ্য প্রতিষ্ঠান খুঁজে পায়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। স্টক ডিলার ও স্টক ব্রোকার ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড, দ্বিতীয় যৌথভাবে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং তৃতীয় যৌথভাবে এমিনেন্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও শেলটেক ব্রোকারেজ লিমিটেড। মার্চেন্ট ব্যাংক ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে গ্রিন ডেল্টা ক্যাপিটাল লিমিটেড ও দ্বিতীয় এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। আর সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ও দ্বিতীয় লংকাবাংলা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। উল্লেখ্য, বিএসইসি গত বছর থেকে ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোকে ‘স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী পুরস্কার’ দিয়ে আসছে। এছাড়া গতকাল একই অনুষ্ঠান থেকে বিএসইসির তিন কর্মকর্তাকে শুদ্ধাচার পুরস্কার দেয়া হয়েছে।