পতনের পর শেয়ারবাজারে আশার আলো

গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্ট। তারপর অতিবাহিত হয়েছে ১৪ কর্মদিবস। এই ১৪ কর্মদিবসের মধ্যে দুই কর্মদিবস বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু দুই কর্মদিবসই লেনদেনশেষে জেড ক্যাটাগরি সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুই আদেশে বাজার আবারও পতনের বৃত্তে ফিরে গেছে।গত ১৪ কর্মদিবস পর আজ সোমবার (০৪ মার্চ) ডিএসইর প্রধান সূচক ২৭২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৭৫ পয়েন্টে। গত সপ্তাহের শেষদিকে বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানো চেষ্টা করেছে। যার কারণে সপ্তাহটির শেষভাগে পতনের মাত্রা অনেক কমে গিয়েছিল। কিন্তু গতকাল রোববার গ্রামীণফোনের ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর বাজারে আবাও বড় ঝাঁকুনি দেখা যায়। এদিন ডিএসইর সূচক পড়ে যায় ৩৯ পয়েন্টের বেশি।তবে ফ্লোরবিহীন লেনদেনের দ্বিতীয় দিনে আজ গ্রামীণফোন অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আজ লেনদেনের শুরুতে শেয়ারটির দাম অনেকটা গেলেও পরক্ষণেই ঘুরে দাঁড়ায়। তবে আজ বাজারে নতুন করে শঙ্কা তৈরি করেছে আরেক বহুজাতিক কোম্পানি বৃটিশ অ্যামেরিকা ট্যোবাকো-বিএটিবিসি। আজ এটিও ফ্লোর প্রাইসবিহীন লেনদেন শুরু করেছে। গ্রামীণফোনের মতো বিএটিবিসি-ও আজ বাজারে বড় ঝাঁকুনি দিয়েছে। যার ফলে আগের দিনের মতো আজও ডিএসইর সূচকের পতন ঘটিয়েছে ৩৯ পয়েন্টের বেশি।বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগেরদিন গ্রামীণফোন বাজারে চড়াও হলেও আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আগামীকাল গ্রামীণফোন বাজারে গ্রামীণফোনের কোনো চাপই হয়তো দেখা যাবে না। বরং এটি ইতিবাচক হয়ে দেখা দিতে পারে। তবে বিএটিবিসি’র চাপ আগামীকালও হয়তো কিছুটা দেখা যেতে পারে। ফলে আগামীকাল মঙ্গলবারও বাজারে সামান্য মনস্তাত্ত্বিক চাপ দেখা যেতে পারে। তবে পরের দিন বুধবার বাজার অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে। তাঁদের মতে, যে মেগা দুই কোম্পানি গ্রামীণফোন ও বিএটিবিসি বাজারকে গত দুই দিন অস্থির করে রেখেছে, সেই দুই মেগা কোম্পানির হাত ধরেই বাজারে আলো দেখা যেতে পারে।বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আজ আগের দিনের মতো সমান পতন হলেও লেনদেন কমে গেছে। যা বাজারের জন্য ইতিবাচক। অন্যদিকে, আগের দিন যে পরিমাণ কোম্পানির পতনে হয়েছিল, আজ সেই পরিমাণ কোম্পানির পতন হয়নি। আজ পতন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় অনেক কমে গেছে। যদিও সূচক কমেছে আগের দিনের সমপরিমাণ।সোমবারের বাজার পর্যালোচনাআজ সোমবার (০৪ মার্চ) ডিএসইর প্রধান প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৯.৯৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ১৭৫ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ৫.২৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৪৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫.৪২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১০৮ পয়েন্টে।আজ ডিএসইতে ৭৯৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৯৮১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার।আজ ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠানের ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ২১৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৭টির।অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ ১৬ কোটি ৩৪ লাখ ০৭ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৮ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট।আজ সিএসইতে ২৫১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৭টির, কমেছে ১৪৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টি প্রতিষ্ঠানের।আগের দিন সিএসইতে ২৬০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছিল ৯৬টির, কমেছিল ১২৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৯টি প্রতিষ্ঠানের।