পতনেও ৩৮ ভাগ লেনদেন দশটির দখলে

Date: 2023-03-24 10:00:16
পতনেও ৩৮ ভাগ লেনদেন দশটির দখলে
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার) লেনদেনের পরিমাণ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। গেল সপ্তায় লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৬২ কোটি ৩ টাকা। যা মোট লেনদেনের ৩৭ দশমিক ৬০ শতাংশই দশ কোম্পানির দখলে রয়েছে। ওই দশ কোম্পানি একাই লেনদেন হয়েছে ৬৬২ কোটি ৫০ টাকা। শেয়াবাজারে মূলধন পরিমাণ কমেছে ৪৮৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সব ধরনের সূচক পতন হয়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর উত্থানের তুলনায় পতন বেশি ছিল।স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্র মতে, গত ১০ অক্টোবর পুঁজিবাজারে সরকারি বন্ডের লেনদেন শুরু হয়। এরপর ডিএসইতে ২৫০ বন্ডের লেনদেন হয়। এতে ডিএসইর বাজার মূলধন ২ লাখ ৫২ হাজার ২৬৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা বেড়ে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছিল। এরপর গত ২৭ অক্টোবর বাজার মূলধন কমে দাঁড়িয়েছিল ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৬১ হাজার ৪১০ কোটি ৯৩ লাখ টাকায়। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৮৯৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৪৮৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।সূত্র মতে, গেল সপ্তায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৬১ কোটি ৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৭৭৮ কোটি ৭ লাখ টাকা বা ৩০ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৫০৮ কোটি ২ লাখ টাকা। গেল সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৪০০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৫৮টির, দর কমেছে ৬৩টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬১টি কোম্পানির। লেনদন হয়নি ১৮টি কোম্পানির শেয়ার।সপ্তাহে ডিএসইর সব ধরনের সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়। এক সপ্তাহে ব্যবধানে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ২১৫ দশমিক ৩০ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই৩০ সূচক দশমিক ৭৪ পয়েন্ট এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৩ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২ হাজার ২১৮ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৫৩ দশমিক ২৫ পয়েন্টে।এদিকে গেল সপ্তাহের শেষে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করে ১৪ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে। যা আগের সপ্তাহের শেষে একই পয়েন্ট ছিল। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১৫ পয়েন্ট ছাড়ালেই তা বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসেবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। এ হিসেবে ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। সেই হিসেবে গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর পিই দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে। পিই রেশিও হিসাবে বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে।গেল সপ্তাহে এ ক্যাটাগরির ৭০ ভাগ কোম্পানির শেয়ার টপটেন লেনদেনে অবস্থান করেছে। বাকী ৩০ ভাগ কোম্পানির শেয়ার বি ক্যাটাগরিতে অবস্থান করেছে। সপ্তাহটিতে মোট লেনদেনের ৩৭ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ার ১০ কোম্পানির দখলে রয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সী পার্ল বিচের শেয়ারে। একাই মোট শেয়ারের ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ লেনদেন করেছে।এছাড়া রুপারী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ, ইস্টার্ন হাউজিং ৩ দশমিক ৮২ শতাংশ, শাইনপুকুর (বি ক্যাটাগরি) ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ, রংপুর ডেইরী এন্ড ফুড প্রোডাক্টস (বি ক্যাটাগরি) ৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, জেনেক্স ইনফোসিস ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ৩ দমমিক ১০ শতাংশ, এডিএন টেলিকম ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং আল-হাজ্ব টেক্সটাইল (বি ক্যাটাগরি) ২ দশমিক ২৭ শতাংশের শেয়ার লেনদেন হয়েছে।উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারের এ ক্যাটাগরির শেয়ার বি ও জেড ক্যাটাগরির থেকে তুলনামূলক ভালো কোম্পানি। নিয়ম অনুসারে, যেসব কোম্পানি বছর শেষে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে তার ঊর্ধ্বে লভ্যাংশ (নগদ বা বোনাস) দেয় তারাই এ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার। যেসব কোম্পানি বছর শেষে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নিচে থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ লভ্যাংশ (নগদ বা বোনাস) দেয় তারা বি-ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার। যেসব কোম্পানি বছর শেষে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নিচে থেকে শুরু জিরো লভ্যাংশ (নগদ বা বোনাস) দেয় তারাই জেড ক্যাটাগরি কোম্পানির শেয়ার। এছাড়া এন ক্যাটাগরি নতুন কোম্পানির শেয়ার। যেগুলোর পুঁজিবাজারের লেনদেন শুরু হয়েছে কিন্তু বছর পার হয়নি, সেইগুলো এন ক্যাটাগরিতে রয়েছে।

Share this news