প্রথমার্ধে সিঙ্গার বাংলাদেশের বিক্রি বেড়েছে ১৮%

প্রকৌশল খাতের বহুজাতিক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের চলতি ২০২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় বিক্রি ও কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দুটোই বেড়েছে। এর মধ্যে বিক্রি প্রায় ১৮ শতাংশ বাড়লেও নিট মুনাফায় আড়াই গুণের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির গতকাল অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভা থেকে এ আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে সিঙ্গার বাংলাদেশের বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৯০ কোটি ৬১ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯২৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ১৬৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা বা ১৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৫৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৩৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা বা ১৫২ দশমিক ৭৪ শতাংশ ( ২ দশমিক ৫৩ গুণ)। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫ টাকা ৮৫ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২ টাকা ৩১ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৪ টাকা ৮৩ পয়সায়। এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ৭১৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৩৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ১৮২ কোটি ৫২ লাখ টাকা বা ৩৪ দশমিক ১২ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪৭ কোটি ৮ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৩৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা বা ২৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ (৩ দশমিক ৩৭ গুণ)। এ সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৭২ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৪০ পয়সা। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সিঙ্গার বাংলাদেশ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৭৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫ টাকা ২০ পয়সা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২৯ টাকা ৯৭ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৩৪ টাকা শূন্য ৬ পয়সা। সিঙ্গার বাংলাদেশের ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ত্রিপল এ’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-১’। কোম্পানিটির সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক গুণগত এবং পরিমাণগত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে এমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (ইসিআরএল)। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৬০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সিঙ্গার বাংলাদেশের পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ২০ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৮ টাকা ৬ পয়সা। ২০২০ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল সিঙ্গার বাংলাদেশ। ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৭৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল প্রকৌশল খাতের বহুজাতিক কোম্পানিটি। এছাড়া ২০১৮ হিসাব বছরে ৩০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা।১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিঙ্গার বাংলাদেশের বর্তমানে অনুমোদিত মূলধন ২৫০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১৮৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৯৭ লাখ ২ হাজার ৮৩৮। এর মধ্যে ৫৭ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে রয়েছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৪ দশমিক ৭৩, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪ দশমিক ৪০ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।ডিএসইতে গতকাল লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর দাঁড়িয়েছে ১৫১ টাকা ৯০ পয়সায়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১৪৯ টাকা ১০ ও ১৫৯ টাকা ৮০ পয়সা।