প্রথম প্রান্তিকে যমুনা অয়েলের মুনাফা বেড়েছে ৬৩ শতাংশ
সর্বশেষ হিসাব বছরে মুনাফা কমলেও চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ভালো মুনাফা হয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জ্বালানি তথা পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েল কোম্পাটি লিমিটেডের। সর্বশেষ ২০২১-২২ হিসাব বছরে আগের হিসাব বছরের তুলনায় কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ৭ শতাংশের বেশি। তবে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৬৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার একই দিনে প্রকাশিত কোম্পানিটির নিরীক্ষিত ও অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড। সংরক্ষণ ও বিপণন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সহজতর উপায় ও সুলভ মূল্যে ভোক্তা পর্যায়ে অকটেন, পেট্রল, ডিজেল, ফার্নেস অয়েল, কেরোসিন, জুট ব্যাচিং অয়েল সরবরাহ নিশ্চিত করা কোম্পানিটির কার্যক্রমের আওতাভুক্ত। এর বাইরে লুব অয়েল, গ্রিজ, বিটুমিন ও এলপিজি বাজারজাতের কাজ করে যমুনা অয়েল। এ বছরের আগস্টে দেশে পরিশোধিত জ্বালানি তেলের রেকর্ড পরিমাণ দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার। মূলত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব কোম্পানিটির সর্বশেষ প্রকাশিত প্রান্তিকের মুনাফায় যোগ হয়েছে।নিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুসারে, সর্বশেষ হিসাব বছরে যমুনা অয়েলের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৮৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২০১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ১৫ কোটি ৭ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৬ টাকা ৮৭ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১৮ টাকা ২৪ পয়সা। এ বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৮৯ টাকায়। আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৮০ টাকা ৮৪ পয়সায়। মুনাফা কমলেও সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ কমায়নি কোম্পানিটির পর্ষদ। সর্বশেষ হিসাব বছরেও আগের বছরের ধারাবাহিকতায় ১২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করা হয়েছে। ঘোষিত লভ্যাংশ ও আলোচ্য হিসাব বছরের অন্যান্য এজেন্ডায় শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারি বেলা ১১টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করেছে কোম্পানিটি। এ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর।এদিকে অনিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে যমুনা অয়েলের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৬৬ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ২৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বা ৬২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ৯৮ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ টাকা ৬৭ পয়সা। এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৯৩ টাকা ৭৭ পয়সায়।৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২০ শতাংশ নগদ দিয়েছে যমুনা অয়েল। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২০১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর আগের হিসাব বছরে কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছিল ২০০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১৮ টাকা ২৪ পয়সা, যা আগের বছরে ছিল ১৮ টাকা ১৩ পয়সা। এর আগের ২০১৯-২০ হিসাব বছরের জন্যও শেয়ারহোল্ডারদের ১২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল যমুনা অয়েল। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। ২০১৭-১৮ হিসাব বছরেও একই হারে নগদ লভ্যাংশ দেয় তারা। এছাড়া ২০১৬-১৭ হিসাব বছরে ১১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।২০০৭ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১১০ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ৭৪৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১১ কোটি ৪ লাখ ২৪ হাজার ৬০০টি শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে ২ দশমিক ৯০ শতাংশ উদ্যোক্তা ও পরিচালক, ৬০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ সরকার, ২৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, দশমিক ২৭ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ৮ দশমিক ৩১ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার যমুনা অয়েল শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ১৬৭ টাকা ৩০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ১৫৫ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১৯২ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছে।