প্রিমিয়ার সিমেন্টের রিজার্ভ ৫৫১ কোটি, ঋণ সাড়ে ১৭০০ কোটি টাকা
![প্রিমিয়ার সিমেন্টের রিজার্ভ ৫৫১ কোটি, ঋণ সাড়ে ১৭০০ কোটি টাকা](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/6573/Primercementbd1_bg20230404163247.jpg)
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস পিএলসির শেয়ার দর গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম রয়েছে।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস পিএলসি : আজ ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার এ শেয়ার সর্বশেষ ৪৪ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে প্রিমিয়ার সিমেন্ট-এর শেয়ার দর ৪৩ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৫৬ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠানামা করে। গত দুই বছরের মধ্যে এ শেয়ারের দর এখন সবচেয়ে কম দামে রয়েছে। ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এ শেয়ারের দর সর্বোচ্চ ৯৫ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠেছিল।মূলধন : ৫০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের এই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১০৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ২০১৩ সালের ৩ মার্চ পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার লেনেদেন শুরু হয়। প্রিমিয়ার সিমেন্টের মোট ১০ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার রয়েছে।এজিএম ও লভ্যাংশ প্রদান : ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ কোম্পানিটির সর্বশেষ এজিএম অনুষ্ঠিত হয়। কোম্পানিটি ২০১৩ সালে ৪০ শতাংশ নগদ, ২০১৪ সালে ৩০ শতাংশ নগদ, ২০১৫ সালে ২০ শতাংশ নগদ, ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ নগদ, ২০১৭ সালে ২০ শতাংশ নগদ, ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ২০ শতাংশ নগদ ও সর্বশেষ ২০২২ সালে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। কোম্পানিটির ডিভিডেন্ট ইল্ড ২.১৪।রিজার্ভ অর্থ : জুনে অর্থবছর শেষ হওয়া প্রিমিয়ার সিমেন্টের মোট রিজার্ভ রয়েছে ৫৫১ কোটি ২১ লাখ টাকা।শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ও নেট সম্পদ মূল্য (এনএভি) : ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ২ টাকা ৫৩ পয়সা ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান কিছুটা কমে ২ টাকা ৪৫ পয়সা হয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে এনএভি ছিল ৬৪ টাকা ৬০ পয়সা ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৪ টাকা ৬৭ টাকায়।কোম্পানিটি প্রধানত সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট এবং পোর্টল্যান্ড কম্পোজিট সিমেন্ট তৈরি করে থাকে। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে মুন্সীগঞ্জের পশ্চিম মুক্তারপুরে দুটি ইউনিটে বার্ষিক প্রায় ১.২ মিলিয়ন মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন শুরু হয়। কোম্পানিটির সিমেন্টের ব্র্যান্ড নাম প্রিমিয়ার সিমেন্ট।শেয়ারধারণ : প্রিমিয়ার সিমেন্টের মোট শেয়ারের ৪৭ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। ২২ দশমিক ২২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ০.০৪ শতাংশ শেয়ার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে বাকি ৩০ দশমিক ৫৯ শতাংশ শেয়ার।মোট ঋণ : প্রিমিয়ার সিমেন্টের স্বল্পমেয়াদী ঋণ রয়েছে ১ হাজার ৪৮৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণ রয়েছে ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।পরিচালনা পর্ষদ : প্রিমিয়ার সিমেন্টের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার, ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ আমিরুল হক, ডিরেক্টর (অপারেশন্স) মোহাম্মদ এরশাদুল হক ও ডিরেক্টর মো আলমগীর কবির।চেয়ারম্যানের সংক্ষিপ্ত পরিচয় : মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার ২০০৫ সালে ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া, মার্শাল স্কুল অফ বিজনেস, ইউএসএ থেকে ফিন্যান্সে বিজনেস স্টাডিজে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পড়াশোনা শেষে তিনি ২০০৫ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। যুক্ত হন প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলসের বিক্রয় ও বিপণনে।প্রিমিয়ার সিমেন্ট সংক্রান্ত সংবাদ : কোম্পানিটির চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় বিক্রি বাবদ আয় বেড়েছিল ৫০ শতাংশের বেশি। তবে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যয় বাড়ায় কর-পরবর্তী নিট লোকসান গুনতে হয়েছে কোম্পানিটিকে। একই অবস্থা দ্বিতীয় প্রান্তিকেও।প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে প্রিমিয়ার সিমেন্টের বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে ৮৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৮৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ২৯৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা বা ৫০ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ২৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছিল ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।সর্বশেষ ডিসেম্বর সময় পর্যন্ত লোকসান হওয়ার কারণ হিসেবে প্রিমিয়ার সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির করণে আলোচ্য সময়ে তাদের অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হয়েছে। এতে কোম্পানির উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় আলোচ্য সময়ে কোম্পানির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে।এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৫১৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৯৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আলোচ্য প্রান্তিকের কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৭৪ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১১ পয়সা।