পাট খাতে বড় উত্থান
পতনের ধারাবাহিকতা কাটিয়ে গত সপ্তাহে সূচক ও লেনদেনের কিছুটা উত্থানের মধ্য দিয়ে পার করেছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহটিতে সূচক বৃদ্ধির সঙ্গে লেনদেন বেড়েছে। তবে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। গত সপ্তাহে উত্থানের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে থাকা পাট খাতে বড় উত্থান হয়েছে। ফলে আলোচ্য খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ার। শেয়ারদর বৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে যথাক্রমে রয়েছে সিরামিক এবং সেবা ও আবাসন খাত।বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে আগ্রহ বেশি থাকা পাট খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ২৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১ দশমিক ২০ শতাংশ বা ২৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা কাগজ খাতে গত সপ্তাহে দর বেড়েছে ৩ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ২০ শতাংশ বা ১৭৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে ২ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল সিরামিক খাত। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের দশমিক ৪ দশমিক ১০ শতাংশ বা ১০০ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে চতুর্থ স্থানে থাকা সেবা খাতে শেয়ারদর বেড়েছে ২ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ বা ৮৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।এদিকে গত সপ্তাহে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে বিমা খাতে। এ খাতে গত সপ্তাহে শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ২০ শতাংশ বা ১৫২ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমে ব্যাংক ও বস্ত্র খাত দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এছাড়া গত সপ্তাহে সিমেন্ট, জীবন বিমা, মিউচুয়াল ফান্ড, আর্থিক, টেলিকমিউনিকেশন এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল।অন্যদিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ খাতে। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৭ দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৬৭০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু খাতটিতে গত সপ্তাহে ১ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইটি খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ১০ শতাংশ বা ৩২১ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এ খাতে গত সপ্তাহে মাত্র ১ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দুই হাজার ৪৫৫ কোটি ৬৪ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ২৪ কোটি ৬৪ লাখ ৫১ হাজার ৫০৬ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেনে ৯১৮ কোটি ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৩ টাকা বেড়েছে।সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৬ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৭২ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২০৮ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে।গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯১টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৪টির বা ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশের, কমেছে ৩০টির বা ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯৭টির বা ৭৫ দশমিক ৯৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিটদর। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ১১১ কোটি ৬৭ লাখ ৯৭ হাজার ১৫৭ টাকার। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২৭ কোটি ৮৬ লাখ ০৫ হাজার ৭৭২ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ৮৩ কোটি ৮১ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৫ টাকা বেড়েছে।সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০৮ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৪৭ দশমিক ২১ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২৭১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬০টির বা ২২ দশমিক ১৪ শতাংশের দর বেড়েছে, ২২টির বা ৮ দশমিক ১৯ শতাংশের কমেছে এবং ১৮৯টির বা ৬৯ দশমিক ৭৪ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।