পাঁচদিন পর সামান্য উত্থান পুঁজিবাজারে

Date: 2022-10-21 03:00:08
পাঁচদিন পর সামান্য উত্থান পুঁজিবাজারে
দেশের পুঁজিবাজারে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের পর সপ্তাহের শেষ দিনে এসে গতকাল সূচকের সামান্য ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। সূচক সামান্য বাড়লেও এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। মূলত লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় বড় মূলধনি কিছু কোম্পানির শেয়ারে ক্রয় আদেশ হওয়ায় পতনের থেকে রক্ষা পেয়েছে সূচক। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সূচক কমলেও দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় লেনদেন শুরুর মাত্র ২ মিনিটে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ১৮ পয়েন্টের বেশি বৃদ্ধি পায়। এরপর সূচকটি কমতে দেখা যায়। দুপুর ১২টা ৩৯ মিনিটে সূচকটি আগের দিনের চেয়ে ৩১ পয়েন্ট কমে যায়। পরে অবশ্য বড় মূলধনি কিছু শেয়ারে ক্রয় আদেশ এলে সূচক বাড়তে থাকে। দিনশেষে ডিএসইএক্স সূচক মাত্র ২ পয়েন্ট বেড়েছে। সূচকটির বর্তমান অবস্থান ৬ হাজার ৩৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবস শেষে যা ছিল ৬ হাজার ৩৯০ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২৭৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ২ হাজার ২৭১ পয়েন্টে। তবে শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে প্রায় ১ পয়েন্ট কিছুটা কমে ১ হাজার ৪০৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১ হাজার ৪০৮ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো লিমিটেড, সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস, কোহিনূর কেমিক্যালস ও সি পার্ল বিচ রিসোর্টসের শেয়ারের।বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদ্যমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে পুঁজিবাজারের ভবিষ্যৎ নিয়েও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। তাছাড়া ফ্লোর প্রাইসের জন্য বাজার লেনদেন হাতে গোনা কিছু কোম্পানির মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ার কারণে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এর বাইরে জুন ক্লোজিং ও ৩০ সেপ্টেম্বর সমাপ্ত প্রান্তিকে অনেক কোম্পানির আর্থিক ফলাফল খারাপ হওয়ায়ও তারা চিন্তিত হচ্ছেন। এতসবের মধ্যেও বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ার থেকে ভালো রিটার্ন পাওয়ার বিশ্বাস নিয়ে গতকাল কিছু বিনিয়োগকারী শেয়ার কিনেছেন।ডিএসইতে গতকাল ৯৭৫ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৬৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৬০টির, কমেছে ৭৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২২৫টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বিবিধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ দখলে নিয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৩ শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। আর কাগজ ও মুদ্রণ খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে কাগজ ও মুদ্রণ খাতে সবচেয়ে বেশি ২ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে পাট খাতে, ৪ দশমিক ৯ শতাংশ।সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ১২ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ হাজার ২৮০ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ২০ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৮০০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৮ হাজার ৮২০ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২০১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ৭৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৯১টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ২৬ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৭ কোটি টাকা।

Share this news