অবণ্টিত ডিভিডেন্ড নিয়েও কারসাজি করছে কোম্পানিগুলো
![অবণ্টিত ডিভিডেন্ড নিয়েও কারসাজি করছে কোম্পানিগুলো](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/5294/30-8-2021.jpg)
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে পরে থাকা অবণ্টিত ক্যাশ ও স্টক ডিভিডেন্ড ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে (সিএমএসএফ) জমা দেয়ার জন্য বার বার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করছেনা কোম্পানিগুলো। পাশাপাশি অবণ্টিত অর্থ বিতরণে কারসাজি করার অভিযোগ রয়েছে বেশ কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে চারটি অডিটর নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।গত রোববার (০৫ ফেব্রুয়ারি) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সিএমএসএফের চিফ অব অপারেশনের (সিওও) কাছে পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠির অনুলিপি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও (এমডি) দেওয়া হয়েছে।বিএসইসির সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন সেলিমের সই করা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সিএমএসএফের সহযোগিতায় কমিশন যেসব কোম্পানি দাবিদারহীন বিনিয়োগকারীদের অবণ্টিত অর্থ জমা এখনো ফান্ডে জমা দেয়নি, সেসব কোম্পানিতে অডিটর নিয়োগ করা হবে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর অতীত ইতিহাস যেমন-ঋণ খেলাপী কী না, নন-কমপ্লায়েন্স ও ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানি কী না তা দেখে কমিশন অডিটর নিয়োগ করা হবে। চারটি অডিটর কোম্পানিকে বাছাই ও নিয়োগ করবে বিএসইসি। অডিটরের সমস্ত ব্যয় বহন করবে সিএমএফএস ফান্ড। অডিট কমিটিকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে সিএমএসএফ কর্তৃপক্ষ।উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর সময় পর্যন্ত শেয়ারবাজার স্থিতিশীল তহবিল বা ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) আকার দাঁড়িয়েছে ১১২১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে নগদ অর্থ দাঁড়িয়েছে ৪৮৯ কোটি ১ লাখ টাকায়। আর ৮ কোটি ১২ লাখ শেয়ার বাবদ অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।সিএমএসএফ সূত্র মতে, ১১শ কোটি টাকার ফান্ডের মধ্যে ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা দাবি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ২২৫ কোটি টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে গোল্ডেন জুবিলি ফান্ডে।সব মিলিয়ে ২৭৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যবহার করা হয়েছে। এখনও ৮৪৫ কোটি ১০ লাখ টাকা অব্যবহৃত রয়েছে। এর মধ্যে কোম্পানির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ২১২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আর কোম্পানিতে ৬৩২ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার রয়েছে।অবণ্টিত ও দাবিহীন ডিভিডেন্ড হচ্ছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো ডিভিডেন্ড ঘোষণার পর তা তাদের ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্ট থেকে বিনিয়োগকারীদের নামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ক্যাশ ডিভিডেন্ড সরাসরি বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। স্টক ডিভিডেন্ড জমা হয় তাদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টে।যাদের নামে শেয়ার তারা কেউ মারা গেলে, বিদেশে চলে গেলে কিংবা দীর্ঘদিন খোঁজ না রাখলে তাদের ব্যাংক হিসাব বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে যায়। বিও হিসাবের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। এমন ক্ষেত্রে ডিভিডেন্ডের টাকা বা শেয়ার বিনিয়োগকারীর ব্যাংক বা বিও অ্যাকাউন্টে জমা না হয়ে কোম্পানির কাছে ফেরত যায়। সেই ডিভিডেন্ডগুলোকেই অবণ্টিত ডিভিডেন্ড হিসেবে গণ্য করেছে বিএসইসি।