নিষ্প্রাণ বাজারেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মুনাফা

Date: 2022-12-26 00:00:07
নিষ্প্রাণ বাজারেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মুনাফা
তালিকাভুক্ত উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কোম্পানি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বেশ পরিমাণে কমেছে। ফ্লোর প্রাইসের ফাঁদে পড়ে থাকার চেয়ে, এসব শেয়ার ছেড়ে দেওয়াতেই তাঁদের অনেকেই বেশি মনোযোগী ছিল। এর ফলে যথারীতি শেয়ার গেছে ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের অ্যাকাউন্টে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই ও সিএসই) তালিকাভুক্ত কোম্পানির গত নভেম্বর শেষে বিনিয়োগকারীভেদে প্রকাশিত শেয়ার ধারণের হার পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে।পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তালিকাভুক্ত ৩৫৩ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ১৬৭ কোম্পানি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে। মোট শেয়ার বিবেচনায় প্রায় ১ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১৭ শতাংশ কমেছে ৬২ কোম্পানি থেকে। বিপরীতে ১০৭ কোম্পানিতে কম-বেশি প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার বেড়েছে। তবে মোট শেয়ার বিবেচনায় প্রায় ১ শতাংশ থেকে প্রায় ১০ শতাংশ শেয়ার বেড়েছে ১৮ কোম্পানিতে।গত নভেম্বরে কোনো কোম্পানির মোট শেয়ার বিবেচনায় সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে সবচেয়ে বেশি। গত অক্টোবরেও এ কোম্পানির প্রায় ২ কোটি শেয়ারের মধ্যে ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শেয়ার ছিল এ ধরনের বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু নভেম্বর শেষে তা মাত্র ৫ দশমিক ২০ শতাংশে নেমেছে। গত জুলাইয়ের শেষে ফ্লোর প্রাইস আরোপের সময় এ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারের পরিমাণ ছিল মোটের ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। পরের দুই মাসে এ ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন ছিল না। গত সেপ্টেম্বর শেষে তা ৭ দশমিক ২০ শতাংশ এবং অক্টোবর শেষে তা ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশে উন্নীত হয়। এর পর নভেম্বরেই এখান থেকে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।ডিএসইতে সিনোবাংলার শেয়ারের দর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ২৪ অক্টোবরও এ শেয়ার ৫৮ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে। হঠাৎ দর বেড়ে তা ১৮ নভেম্বর ৯৩ টাকা ৮০ পয়সা হয়। গত বৃহস্পতিবার শেয়ারটি ফের ৫৮ টাকার নিচে নেমেছে। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তা জানান, ফ্লোর প্রাইসে যেখানে পুরো বাজার পঙ্গু হয়েছিল, এর মধ্যে কিছু বিনিয়োগকারী দর বাড়িয়ে নিজেদের ব্যবসা করে নিয়েছে।একই চিত্র দেখা গেছে ইস্টার্ন কেবলস কোম্পানির ক্ষেত্রে। গত অক্টোবর শেষেও এ কোম্পানির মোট ২ কোটি ৬৪ লাখ শেয়ারের ২৫ শতাংশের বেশি ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অ্যাকাউন্টে। কিন্তু নভেম্বর শেষে তা ১২ শতাংশে নেমেছে। এর আগে গত ১০ অক্টোবর এ শেয়ার ১৮২ টাকা থেকে দুই দফায় ওঠানামা শেষে গত ৮ নভেম্বর পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৫৩ টাকায় ওঠে। গত ৭ ডিসেম্বর শেয়ারটি ফের ১৮২ টাকায় নামে। এখন আবার নতুন করে উত্থান-পতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।এ ছাড়া ইনফরমেশন সার্ভিসেস কোম্পানিতে গত সেপ্টেম্বর শেষে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ছিল মোটের সাড়ে ১০ শতাংশ। অক্টোবর শেষে তা ২২ দশমিক ৮৭ শতাংশে উন্নীত হয়। এক মাসের ব্যবধানে গত নভেম্বর শেষে ফেরতা ১১ দশমিক ৩৯ শতাংশে নামে। গত ২৪ অক্টোবর এ শেয়ারের দর ছিল ৫৪ টাকা। গত ২ নভেম্বর তা ৭৬ টাকা ছাড়ায়। এখন শেয়ারটির দর ৫২ টাকা।প্রায় একই রকম চিত্র ছিল নাভানা ফার্মা, ইন্ট্রাকো সিএনজি রিফুয়েলিং, আমরা টেকনোলজিস, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সি ফুডস, আইটি কনসালট্যান্টস, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ইন্দো-বাংলা ফার্মা এবং হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপারের ক্ষেত্রে। এসব কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে মোট শেয়ার বিবেচনায় ৫ থেকে প্রায় ১৩ শতাংশ। এ ছাড়া আরও প্রায় ২৫ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কমেছে ২ থেকে প্রায় ৫ শতাংশ।এদিকে আমরা নেটওয়ার্ক কোম্পানিতে গত নভেম্বরে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার বেড়ে যাওয়ার ধারা লক্ষ্য করা গেছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে ৫ কোটি ৯০ লাখ শেয়ারের এ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ছিল মোটের ২৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। অক্টোবর শেষে তা ২৭ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ ছাড়ায়। নভেম্বর শেষে ৩৬ দশমিক ৯৫ শতাংশে উন্নীত হয়। এভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার বৃদ্ধির প্রভাবও দেখা গেছে শেয়ারটির দরে।গত অক্টোবর শেষে ডিএসইতে শেয়ারটি ৩৮ টাকার নিচে কেনাবেচা হচ্ছিল। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ১৪ নভেম্বর এর দর প্রায় ৫৭ টাকায় উন্নীত হয়। এর পর কিছুটা উত্থান-পতনের পর গত ১২ ডিসেম্বর ৬২ টাকা ছাড়ায়। এর পর আবার পতনের ধারায়। বৃহস্পতিবার শেয়ারটি সর্বশেষ ৫০ টাকার কমে কেনাবেচা হয়।

Share this news