নিরীক্ষায় মনোস্পুল ও পেপার প্রসেসিংয়ে যত অনিয়ম

শেয়ারবাজারে কারসাজিকারদের হাতিয়ার ও সাধারন বিনিয়োগকারীদের প্রতারণার ফাঁদ পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে নিরীক্ষায় বিভিন্ন অনিয়ম খুজেঁ পেয়েছে নিরীক্ষক। যার মধ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাহিরে অসংখ্য নগদে লেনদেন করা হয়েছে। যেখানে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। যা চাইলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিশেষ নিরীক্ষার মাধ্যমে বের করে আনতে পারে। যে কোম্পানি দুটির জন্য সুদে ঋণ নিয়ে গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনাসুদে সরবরাহের মাধ্যমে এখন উচ্চ দরে শেয়ার বেচে সেই ঋণ পরিশোধের নাটক সাজানো হয়েছে।কোম্পানি দুটির ২০২১-২২ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় বিভিন্ন অনিয়ম উঠে এসেছে।বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, নগদে লেনদেন করার মাধ্যমে ব্যয় অতিরিক্ত দেখিয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। যে কারনে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ধারা ৩০(এম) অনুযায়ি, কোন কোম্পানি লেনদেনের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকার উপরে গেলে, ব্যাংকিং চ্যানেলে পেমেন্টে বাধ্যতামূলক।মনোস্পুল পেপার : ২০২১-২২ অর্থবছরের কোম্পানিটির জমি ও জমি উন্নয়নবাবদ ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ও ক্যাপিটাল ওয়ার্ক-ইন-প্রসেসবাবদ ৪৫ লাখ টাকা ব্যবহার করা হয়েছে। যার পুরোটাই নগদে করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অনিয়মের সুযোগ রয়েছে। তাই সত্যতা যাচাই করা দরকার। এছাড়া ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের ৬৩ লাখ টাকা নগদে পরিশোধ করা হয়েছে। এমনকি জমি কেনার জন্য অগ্রিম হিসেবে ৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা নগদে দেওয়া হয়েছে।এই কোম্পানিটির ৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার স্থায়ী সম্পদ রয়েছে বলে আর্থিক হিসাবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু এর কোন সঠিক রেজিস্টার বুক নেই।পেপার প্রসেসিং : এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ শ্রম আইন সঠিকভাবে পরিপালন করেন। তারা আইন অমান্য করে ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের সব টাকা কর্মচারিদের মধ্যে বিতরন করে দিয়েছে।এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে ৩৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকার স্থায়ী সম্পদ দেখিয়েছে। কিন্তু নিরীক্ষক সব তথ্য যাচাইয়ে ওইসব সম্পদ ক্রয়ের তারিখ খুজে পাননি। এর মাধ্যমেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ব্যয় কমিয়ে মুনাফা অতিরঞ্জিত করে দেখাতে পারে। তারা সম্পদ আগে কিনলেও তা পরে দেখিয়ে অবচয় কম চার্জ করতে পারে। যে কারনে রেজিস্টার বুক আপডেট করা দরকার।এদিকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে ১৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার মজুদ পণ্য দেখালেও, নিরীক্ষক তার পুরোটার সত্যতা পায়নি। নিরীক্ষক জানিয়েছেন, তারা সরেজমিনে মজুদ পণ্যের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে কিছু আইটেমের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি।মনোস্পুলের ন্যায় পেপার প্রসেসিং কর্তৃপক্ষও জমি ও জমি উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণে নগদে লেনদেন করেছে।