নগদ লভ্যাংশ নেবে না ৪৯ কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালক

৪৬টি থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় ৪৯ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এছাড়া ১ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের থেকে কম হারে নগদ লভ্যাংশ নেবেন। অথচ কোম্পানিগুলোতে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। এমনকি অনেকগুলো কোম্পানির আর্থিক হিসাব অনুযায়ি পরিচালকদের নগদ লভ্যাংশ নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে।সাধারন বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্যোক্তা/পরিচালকদের এই ছাড় দেওয়াকে ইতিবাচক বলছেন সাধারন বিনিয়োগকারীরা। তবে এর পেছনের প্রকৃত অর্থে কি কারন রয়েছে, তা প্রকাশ না করায় প্রশ্ন থেকে যায়। কারন হিসেবে তাদের দাবি, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো থেকে উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা এমনিতেই বিভিন্নভাবে সুবিধা নেন। তারা নিজেদের বাসার জন্য বাজার, কাজের বুয়ার বেতনসহ বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে থাকেন। যে কারনে নগদ লভ্যাংশ ছাড় দিতে তাদের খুব একটা অসুবিধা হয় না। যারা একদিক দিয়ে ছাড় দিলেও অন্যদিক দিয়ে ঠিকই আদায় করে নেয়।দেখা গেছে, গত ১ জুলাই থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে লভ্যাংশ সংক্রান্ত সভা করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪৯টির পর্ষদ শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। যে কোম্পানিগুলো থেকে ১৫৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ বিতরন করা হবে। অথচ কোম্পানিগুলোর নিট মুনাফা হয়েছে ৫৫০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।বর্তমানে নগদ লভ্যাংশ প্রদানের কড়াকড়ি থাকায় অনেক কোম্পানির জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃত্রিম মুনাফা দেখিয়ে বোনাস দেওয়া সম্ভব হলেও নগদের ক্ষেত্রে তা হয় না। যা অনেকের জন্য সমস্যার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া করোনা পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাবে সব কোম্পানির জন্য নগদ লভ্যাংশ দেওয়া কঠিন হয়ে গেছে। যে কারনে শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হচ্ছে বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, সক্ষমতা না থাকায় গত বছরের ন্যায় এবারও অনেক কোম্পানির পর্ষদ শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এটাও করত না, যদি নগদ লভ্যাংশ প্রদানে বাধ্যবাধকতা না থাকত। শুধুমাত্র বোনাস শেয়ার দিয়েই ক্যাটাগরি ধরে রাখার চেষ্টা করত।দেখা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় ৪৯ কোম্পানির পর্ষদ শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে ৫ কোম্পানির পর্ষদ বোনাস শেয়ারও ঘোষণা করেছে। উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা ওই ৪৯ কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ না নিলেও সবাই বোনাস শেয়ার নেবেন।পাঁচটি কোম্পানি থেকে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৯ হাজার ১২২টি বোনাস শেয়ার দেওয়া হবে। এতে করে কোম্পানিগুলোর ৩১ কোটি ৭৯ লাখ ১ হাজার ২২০ টাকার পরিশোধিত মূলধন বাড়বে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডরিন পাওয়ারের সচিব মাসুদুর রহমান ভূইয়া বিজনেস আওয়ারকে বলেন, আমাদের উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা বরাবরই শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তারা সাধারন শেয়ারহোল্ডারদেন দেন এবং নিজেদের অংশ কোম্পানির উন্নয়নে রেখে দেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কোম্পানির সচিব বিজনেস আওয়ারকে বলেন, অনেকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। যে কারনে তারা অনেক সময় বাস্তব অবস্থার চেয়ে বেশি করে মুনাফা দেখায়। এর ফলে আর্থিক হিসাব অনুযায়ি সক্ষমতা থাকলেও বাস্তবে না থাকায় সবাইকে নগদ লভ্যাংশ দিতে পারে না। তখন শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের দেয়।