মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর মূলধন হ্রাস পেয়েছে এক তৃতীয়াংশ

Date: 2023-03-16 01:00:16
মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর মূলধন হ্রাস পেয়েছে এক তৃতীয়াংশ
শেয়ারবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের তালিকাভুক্তির পর দেখা যায় মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর এক তৃতীয়াংশ মূলধন হ্রাস পেয়েছে। ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে দেখা যায় ক্রয় মূল্যের সাথে এনএভির বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। এছাড়াও ক্লোজ এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে এনএভি’র ১০-৩০% পর্যন্ত কম মূল্যে লেনদেন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. মিজানুর রহমান।বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ডিএসই এবং লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেড এর যৌথ উদ্যোগে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) এর অপারেশনাল প্রসিডিউর বিষয়ক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়৷ কর্মশালা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহাম্মদ হাসান বাবু৷ড. মিজানুর রহমান বলেন, অনুসন্ধানে দেখা যায় বিভিন্ন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির বিনিয়োগ যথোপযুক্ত না হওয়ার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা গত আড়াই থেকে ৩ বছর যাবত অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কার্যক্রম উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। এখনো এখাতে এই ধরনের উন্নয়ন হয়নি, এর কারণ হলো ভালো অ্যাসেট ম্যানেজারদের পুরস্কৃত এবং মন্দ অ্যাসেট ম্যানেজারদের শাস্তি প্রদান না করা।তিনি বলেন, ইটিএফ হলো বিনিয়োগের নতুন একটি খাত। পূর্ববর্তী কমিশন ইটিএফ নিয়ে আইন প্রণয়ন করলেও কোন ইটিএফ বাজারে আসেনি। ২০২১ সালে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড রুলস নিয়ে কাজ করার সময় সেখানে কিছু ঘাটতি দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে আমরা সমস্যাগুলো সমাধানে কয়েকটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করি। এ খাত একটি ব্যাপক সম্ভাবনাময় খাত। আমরা আশা করি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি এই অ্যাসেট ক্লাসে তারল্য বাড়াতে সক্ষম হবে। অনুমোদিত অংশগ্রহণকারী, মার্কেট মেকারদের পর্যাপ্ত তরল্য নিশ্চিত করার ও ইটিএফ এর ন্যাভ এবং বিক্রয় মূল্যের মধ্যে ন্যূনতম স্প্রেড নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন কানুন করা হয়েছে। খরচ সবসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং পাইপলাইনে যে দুইটি ইটিএফ রয়েছে তাদের অপারেটিং খরচ সম্পর্কে খুব সতর্ক ছিলাম।আমরা মিউচুয়াল ফান্ডের সমস্ত সমস্যা বাদ দিতে চাই যা ইটিএফ-এ থাকবে না। ইটিএফ ক্লোজ এন্ড মিউচুয়াল ফান্ডের সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত৷ কিন্তু পার্থক্য হল যে ইটিএফ স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন করা হবে৷ তাই এখানে ইক্যুইটির একাধিক উৎস থাকবে।তবে আশার কথা হচ্ছে আমরা ইটিএফ-এর ক্ষেত্রে পারফরম্যান্স ফি অন্তর্ভূক্ত করেছি। মিউচ্যুয়াল ফান্ডে কোন পারফরমেন্স ফি ছিলনা। এখানে যদি ভাল পারফরমেন্স করা যায় তবে বিনিয়োগকারীর সাথে অ্যাসেট ম্যানেজারগণও এর অংশীদার হবেন। একাউন্টিং ভ্যালুয়েশন রিপোর্টিং আইন অনুযায়ী পরিপালন করতে হবে। ইটিএফ-এর রিপোর্টিং মিউচ্যুয়াল ফান্ড থেকে ভিন্ন হবে। আমি ডিএসইকে অনুরোধ করব যে অ্যাসেট ম্যানেজারদের কোনো বিলম্ব এবং কোনো হেরফের ছাড়াই রিপোর্ট জমা দেয়া নিশ্চিত করতে। আমাদের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও ভবিষতের প্রবৃদ্ধি জন্য কাজ করতেও হবে। আর এর মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতি উন্নত অর্থনীতিতে পরিণত হবে।অনুষ্ঠানের সভাপতি ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, পুঁজিবাজার উত্থান-পতনের এই সংকটময় মুহূর্তে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড বাজারে আসছে যা বাজারে পণ্যের বৈচিত্র্য আনয়নে কাজ করবে। এটি বাজারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ, যা তারল্যের সীমাবদ্ধতা এবং বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তার সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।তিনি আরও বলেন, মাত্র ২ বছর আগের একটি গবেষণাপত্রে ২০০৩ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বিশ্ব বাজারে ইটিঅফ প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে এমন একটি তথ্য দেখা গিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে অনেক উত্থান-পতন এবং তারল্য সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। এই সংকট উত্তরণের জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নতুন নতুন পণ্য বাজারে নিয়ে আসছে এবং আরও নতুন পণ্য আনার কথা ভাবছে, যা পণ্যের সীমাবদ্ধতা দূর করবে এবং বাজারের তারল্য বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার, লংকাবাংলা সিকিউিরিটিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী, ডিএসই’র মার্কেট ডেভলপম্যান্ট বিভাগের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ছামিউল ইসলাম, প্রোডাক্ট এন্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সাইদ জুবায়ের মাহমুদ এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড কোম্পানির প্রতিনিধিবৃন্দ৷

Share this news