মেয়াদ শেষ হচ্ছে জিবিবি পাওয়ারের, শেয়ার দরে লাফ

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের কোম্পানি জিবিবি পাওয়ারের একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা জুনের মাঝামাঝিতে। অথচ এর আগের মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ছে তড়তড়িয়ে। টানা ছয় দিনে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২২ দশমিক ৫১ শতাংশ। কিছুদিন আগেও যে কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতা ছিল না।হঠাৎ করে শেয়ারদরে এমন উল্লম্ফন ও বিপুল শেয়ার হাতবদল হলেও দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির ১১ বছর পর বেসরকারি খাতের কোম্পানিটি থেকে সরকারের বিদ্যুৎ কেনা বন্ধ হলে এটির বিনিয়োগকারীদের কী হবে, সে বিষয়ে কোনো বার্তাই আসেনি এখন পর্যন্ত। ২০১২ সালের জুনে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া জিবিবি পাওয়ার।২০০৮ সালে বগুড়া শহরে ২২ দশমিক ৮ মেগাওয়াটের গ্যাসভিত্তিক একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলে। এ থেকে ১৫ বছর বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে সরকার। চলতি বছরের ১৭ জুন সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর কী হবে তা নিয়ে কোনো ঘোষণা নেই। এ বিষয়ে জিবিবি পাওয়ারের বক্তব্য জানতে কোম্পানির সচিব সাত্তার হোসেনকে ফোন করা হলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।তালিকাভুক্ত জিবিবি পাওয়ারের টিকে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়টি গত এক বছরে শেয়ারদরেও ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ২০২২ সালের মে মাসের শুরুতে ১০ টাকার প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয় ২৫ টাকা ৯০ পয়সায়। সেটি ওই বছর ৬ অক্টোবরে নেমে দাঁড়ায় ১৯ টাকা ৬০ পয়সায়। ফ্লোরপ্রাইসের কারণে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ দরই ছিল।শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ২২ ডিসেম্বর থেকে কিছু কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দিয়ে দরপতনের সর্বোচ্চ হার ১ শতাংশ নির্ধারণের পর টানা ৪৮ কর্মদিবস কমে জিবিবি পাওয়ারের শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ১৫ টাকায়। তখন প্রতিদিন ১০ পয়সার বেশি দাম কমার সুযোগ ছিল না। এরপর দুই দিন বাড়ার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ফের ফ্লোর প্রাইস দেয়। তখন শেয়ারের সর্বনিম্ন দর ঠিক হয় ১৫ টাকা ১০ পয়সা।সেই ফ্লোর প্রাইসেই ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত হাতে গোনা কিছু শেয়ার লেনদেন হতে দেখা যায়। এরপর একদিন কিছুটা বাড়লেও পরের দিনই আবার ফ্লোরে নেমে আসে দর। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এমন চিত্রই ছিল। এরপর হুট করে মে মাসের প্রথম কর্মদিবস থেকে শেয়ারদর বাড়তে থাকে। এসময়ে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কিছু ফেইসবুক পেইজে কয়েকজন এটির শেয়ারদর বাড়বে বলে পোস্ট দিতে থাকেন। এরমধ্যেই যে কোম্পানির শেয়ারদর টানা ৪৮ কর্মদিবস কমেছে, সেটির দর টানা ছয় কর্মদিবস বেড়ে ১০ মে দাঁড়ায় ১৮ টাকা ৫০ পয়সা। ৩ টাকা ৪০ পয়সা বা ২২ দশমিক ৫১ শতাংশ বাড়ার পর গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে কিছুটা কমে দর দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৮০ পয়সা।এসময়ে শেয়ার লেনদেনও বেড়ে যায় অনেক। গত বছরের ১০ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত লাখ লাখ শেয়ার বিক্রির জন্য বসিয়ে রাখলেও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। এরপর ১৮ জানুয়ারি ও ৫ মার্চ এক লাখ ৬০ হাজারের মতো শেয়ার হাতবদল হয়; বিক্রেতার ঘরে অর্ডার বসানো ছিল আরও বহুগুণ। গত ২৫ এপ্রিল হঠাৎ করেই ১৪ লাখের বেশি শেয়ার হাতবদল হয়। তা বেড়ে ৭ মে প্রায় ১৯ লাখ এবং ৯ মে লেনদেন হয় ২৪ লাখ ৫৫ হাজার ৮৯৬টি শেয়ার।