লভ্যাংশ গতাণুগতিক, শেয়ার দর অস্বাভাবিক

: শেয়ারবাজারে গেম্বলিং আইটেমে পরিণত হওয়া বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের মুনাফা ও লভ্যাংশ আহামরি কিছু না। তবে কৃত্রিমভাবে কোম্পানিটির শেয়ার দর আকাশচুম্বি করা হয়েছে। যার সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল নেই। যে শেয়ারটি থেকে কারসাজি ছাড়া কোম্পানির ব্যবসা দিয়ে ৭৫ বছরেও বর্তমান দরের বিনিয়োগ ফেরত পাওয়া যাবে না। যাতে ঝুঁকিতে বিনিয়োগ।ভিত্তি ছাড়া এমন দূর্বল কোম্পানিতে বিনিয়োগের কারনেই বড় লোকসান গুণে সাধারন বিনিয়োগকারীরা। এসব বিষয়ে বিনিয়োগকারীদেরকে সচেতন করা হলেও তারা লোভে পড়ে বিনিয়োগে যান। যেটাকে কাজে লাগায় গেম্বলাররা। ফলে চূড়ান্তভাবে সাধারন বিনিয়োগকারীরা লোকসান গুণে।গতানুগতিক লভ্যাংশের বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। যে কোম্পানিটির মুনাফা আহামরি কিছু না হওয়ার কারনে কোম্পানিটি থেকে বর্তমান বিনিয়োগই ফেরত পেতে অপেক্ষা করতে হবে ৮০ বছর। যদি শেয়ারটির দর আরও বাড়ে, তাহলে এরচেয়ে বেশি অপেক্ষা করতে হবে। যে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগে মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় মার্জিন ঋণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে।বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মূল্য-আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বিশ্লেষণ একটি অন্যতম হাতিয়ার। যার মাধ্যমে সহজেই বোঝা যায় বিনিয়োগ ফেরত পেতে কত সময় লাগবে। এই পদ্ধতিতে ওরিয়ন ইনফিউশন থেকে বিনিয়োগ ফেরত পেতে লাগবে ৮০ বছর।দেখা গেছে, ৬ অক্টোবর লেনদেন শেষে বিকন ফার্মার শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৩৮০.৮০ টাকায়। আর কোম্পানিটির ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৩.৫৮ টাকা। এ হিসাবে বছরে ইপিএস হবে ৪.৭৭ টাকা। যাতে করে ৩৮০.৮০ টাকার বিনিয়োগ ফেরতে লাগবে ৮০ বছর।তবে কোম্পানির ভিত্তি ছাড়াও অনেক সময় দূর্বল কোম্পানির শেয়ার থেকে কারসাজির মাধ্যমে মুনাফা করা যায়। সেক্ষেত্রে একটি পক্ষ লাভবান হলেও অন্য একটি পক্ষকে বড় লোকসান গুণতে হয়। আর সেই দলে থাকে সাধারন বিনিয়োগকারীরা। যারা আবার এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে শুরু করে সরকারকে দোষারোপ করে থাকে। অথচ তাকে ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ার কিনতে কেউ বাধ্য করে না।অথচ কোম্পানিটির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি নিয়ে সতর্ক করেছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। তারা গত ২০ সেপ্টেম্বর শেয়ারটির দর বৃদ্ধির পেছনে কোন কারন নেই বলে জানিয়েছে। এসত্ত্বেও কোম্পানিটির গত সপ্তাহে ২০.৬২% দর বেড়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির ২য় স্থান দখল করেছে।এমন অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি পাওয়া বিকন ফার্মার বিগত বছরগুলোতে লভ্যাংশ প্রদানের হার খুবই দূর্বল। এ কোম্পানিটি থেকে ২০২১ সালের আগে সর্বোচ্চ ৬% লভ্যাংশ দেওয়ার তথ্য আছে। তবে সর্বশেষ ২০২১ সালে ১৫% লভ্যাংশ দিয়েছিল। যেটা শেয়ারটির বাজার দরের তুলনায় খুবই নিছক।