লোকসানে উসমানিয়া গ্লাস

Date: 2023-01-20 16:00:12
লোকসানে উসমানিয়া গ্লাস
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানি উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি লিমিটেড সর্বশেষ ছয় বছর ধরে টানা লোকসানে রয়েছে। অবশ্য সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটির ব্যবসার পরিধি বেড়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী লোকসানও কমেছে। এছাড়া চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকেও (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির ব্যবসা বাড়ার পাশাপাশি নিট লোকসান কমেছে।কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ হিসাব বছর থেকে টানা লোকসানে রয়েছে উসমানিয়া গ্লাস। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির মোট বিক্রি হয়েছিল ২২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির গ্রস লোকসান হয়েছে ৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। একই হারে পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭-১৮ হিসাব বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির মোট বিক্রি হয়েছে ২৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। এ সময়ে তাদের গ্রস লোকসান হয়েছে ৭০ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছিল ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।২০১৮-১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির মোট বিক্রি হয়েছে ৩৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে বিক্রি আগের বছরের তুলনায় বাড়ার পাশাপাশি কোম্পানিটির গ্রস লোকসান আরো বেড়েছে। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটির গ্রস লোকসান হয়েছে ৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি।২০১৯-২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিক্রি কমার পাশাপাশি গ্রস লোকসান বেড়েছে। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছিল ১৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির গ্রস লোকসান হয়েছে ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান গুনতে হয়েছে ১২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। লোকসানের কারণে আলোচ্য হিসাব বছরেও কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি।আগের দুই বছরের ধারাবাহিকতায় লোকসানের কারণে ২০২০-২১ হিসাব বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। এ বছরে কোম্পানিটির মোট আয় হয়েছে ৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর বিপরীতে গ্রস লোকসান হয়েছে ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছিল ১১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।সর্বশেষ ২০২১-২২ হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিক্রি কয়েক গুণ বেড়েছে। এর পাশাপাশি নিট লোকসানের পরিমাণও কমে এসেছে। সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটির মোট বিক্রি হয়েছে ২৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর বিপরীতে গ্রস লোকসান গুনতে হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লোকসানে থাকায় সর্বশেষ হিসাব বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশের সুপারিশ করেনি কোম্পানিটি।এদিকে চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৪৮ লাখ টাকা। এ সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২৮ পয়সা। এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির নিট লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এ সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৯৬ পয়সা। এ সময়ে লোকসান কমার কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের পরিচালন লোকসান অনেক কমে এসেছে। এজন্য তাদের নিট লোকসানও কমে এসেছে।উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি ১৯৮৭ সালে শেয়ারবাজারে আসে। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৭ কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার টাকা। পুঞ্জীভূত লোকসান রয়েছে ৪৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৭৪ লাখ ১০ হাজার ৯০০। এর মধ্যে ৫১ শতাংশ শেয়ারই সরকারের হাতে রয়েছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ২ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, ১৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ৩২ দশমিক ৬৫ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে রয়েছে।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত বৃহস্পতিবার উসমানিয়া গ্লাসের শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ৬১ টাকা ৯০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৫৫ টাকা ৬০ পয়সা ও ৮৬ টাকা ৬০ পয়সা।

Share this news