লেনদেনে বার বার বিঘ্ন ঘটায় ডিএসইর ব্যাখ্যা তলব
শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেনে প্রায়শই বিঘ্ন ঘটতে দেখা যায়। গত ২৪ ও ৩০ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক দেরিতে শুরু হয়েছিল লেনদেন। উভয় দিনই ওয়েবসাইটে ঘোষণা দেওয়ার পরও নির্ধারিত সময়ে লেনদেন শুরু করতে পারেনি ডিএসই।এর মধ্যে প্রথম দিন প্রতিষ্ঠানটিতে কারিগরি ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। আর দ্বিতীয় দিন ফ্লোর প্রাইস সমন্বয় করতে গিয়ে নিজেদের ভুলের জন্য যথা সময়ে লেনদেন শুরু করতে পারেনি।অবস্থা বেগতিক দেখে উভয় দিনই লেনদেন চালু করার সময় নির্ধারণ করে দেয় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।তাই নির্ধারিত সময়ে লেনদেন শুরু করতে না পারার কারণে ডিএসইর কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছে কমিশন।সম্প্রতি ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) এবং প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) বরাবর এই সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৩০ অক্টোবর ওয়েবসাইটে ঘোষণা দেওয়ার পরেও বিসইসির অনুমোদিত সময়ের চেয়ে দেরিতে লেনদেন শুরু করে ডিএসই। তাই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ৬(৩) এর অধীনে এই চিঠি জারির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লেনদেন বিলম্বিত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।এদিকে, গত ৩০ অক্টোবর লেনদেন দেরিতে শুরু করার কারণে ডিএসইর চিফ টেকনোলজি অফিসার (সিটিও) মো. জিয়াউল করিমকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। গত ৩১ অক্টোবর (সোমবার) ৮৪৩তম নিয়মিত কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।বিএসইসি থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন সময়ে ডিএসইর নিরবচ্ছিন্ন লেনদেন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। পূর্বেও বিভিন্ন কমিটি ডিএসইর আইটি কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাই শেয়ারবাজারের উন্নয়নে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কমিশন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়গুলো সম্পূর্ণ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ডিএসইর সিটিওকে বাধ্যতামূলকভাবে ছুটিতে পাঠানো হলো।কমিশন আরও জানিয়েছে, ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদকে অবিলম্বে সমস্যা সমাধানে আইটি বিভাগকে দক্ষ মানবসম্পদ দিয়ে ঢেলে সাজানোসহ নতুন মানবসম্পদ নিয়োগের মাধ্যমে যুগোপযোগী আইটি ফাংশন গড়ে তুলতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হলো।এর আগে ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি, ১৮ মার্চ, ২২ মার্চ, ১৮ জুলাইও কারগরি ত্রুটির কারণে ডিএসইতে লেনদেন বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে ২৪ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি করে বিএসইসি। ওই কমিটি ১৪ সেপ্টেম্বর রিপোর্ট জমা দেয়। ডিএসইর তথ্য ও প্রযুক্তি (আইটি) বিভাগের দুর্বলতা ও না বোঝার কারণে আপডেট সফটওয়্যার চালুর পরে ওয়েবসাইট নিয়ে ভোগান্তি হয়েছিল বলে জানায় তদন্ত কমিটি। তবে এক্ষেত্রে ডিএসইর ইচ্ছাকৃত কোনো ভুল বা জালিয়াতি ছিল না বলে তদন্তে উঠে আসে।