ক্রেতা সংকটে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান

দেশের শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে তার চারগুণের বেশি কমেছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ৫ হাজার কোটি টাকার ওপর কমে গেছে। সেই সঙ্গে কমেছে সবকটি মূল্য সূচক। পাশাপাশি কমেছে লেনদেন।এদিকে, দাম কমার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি গত কয়েক মাসের মতো তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট ছিল গত সপ্তাহজুড়েও। ফলে প্রায় দুইশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।এমন বাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৫ কোটি ৮৭১ টাকা বা দশমিক ৭৫ শতাংশ। বাজার মূলধন কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মেলিতভাবে ওই পরিমাণ কমেছে।এদিকে, সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ৩৫টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৪টির। আর ২০৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩২ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা দশমিক ৫২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৯ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বা দশমিক ১৫ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা তিন সপ্তাহ কমলো ডিএসইর প্রধান সূচক।প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি গেলো সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গেলো সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৯ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৭ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর মাধ্যমে ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক টানা চার সপ্তাহ কমলো।অপরদিকে, প্রধান মূল্য সূচকের মতো টানা তিন সপ্তাহ কমেছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৪ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।সবকটি মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫৯২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৭৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বা ৩০ দশমিক ১১ শতাংশ।আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৭১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৯৬৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে ৮৯২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বা ৩০ দশমিক ১১ শতাংশ।সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে খান ব্রাদার পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৪ কোটি ১ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০১ কোটি টাকা। ৮০ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সোনালী পেপার।এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, লিগাসি ফুটওয়্যার, এমারেল্ড অয়েল, দেশবন্ধু পলিমার, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং।