ক্রেতা সংকটে ২২১ প্রতিষ্ঠান
![ক্রেতা সংকটে ২২১ প্রতিষ্ঠান](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/5634/Dse-investor_bg20230227120033.jpg)
অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার পর শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক ও লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।অবশ্য সূচক-লেনদেন বাড়লেও দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এমনকি লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে লেনদেনের প্রায় পুরো সময়।টানা দরপতন আর লেনদেন খরা দেখা দেওয়ায় রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মতিঝিলে অবস্থিত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আগের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে বিনিয়োগকারীদের একটি দল ব্রোকারেজ হাউজ ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসে এক ঘণ্টার বেশি সময় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এরপর বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১২ দফার একটি স্মারকলিপি দেন।এতে পুঁজিবাজার গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত স্মার্ট পুঁজিবাজার গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে অপ্রদর্শিত আয় বিনাশর্তে ৫ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।এছাড়া স্বল্পসুদে বিনিয়োগকারীদের ঋণ দেওয়ার জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি লভ্যাংশের ওপর সম্পূর্ণভাবে ট্যাক্স প্রত্যাহার করা, তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের পার্থক্য ১৫ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়েছে।এ পরিস্থিতিতে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে শুরু হয় লেনদেন। লেনদেনের শেষপর্যন্ত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের ধারা অব্যাহত থাকে। তবে লেনদেনের শেষ দেড়ঘণ্টায় দরপতনের তালিকা থেকে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। এতে একদিকে সবকটি মূল্যসূচক বাড়ে, অন্যদিকে বাড়ে লেনদেনের পরিমাণ। অবশ্য এরপরও দরপতনের তালিকায় বড় রয়েছে।দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৫৬টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৮টির। আর ১৫৬টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে।এর মধ্যেই দিনের লেনদেনের বেশিরভাগ সময় ২২১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে। যার মধ্যে ১৪২টি প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। আর ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া ৭৯টি প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে।এরপরও ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২১৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। অবশ্য লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৬১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৩১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি ৩২ লাখ টাকা।ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের ১৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিপার্ল বিচ রিসোর্ট।এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এডিএন টেলিকম, শাইনপুকুর সিরামিক, ইস্টার্ন হাউজিং, মুন্নু অ্যাগ্রো, জেমিনি সি ফুড, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন এবং আলহাজ্ব টেক্সটাইল।অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৩৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪০টির এবং ৭০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।