কাট্টলী টেক্সটাইল: আইপিও অর্থ ব্যবহার না করায় বিএসইসির উদ্বেগ

Date: 2022-09-11 05:39:49
কাট্টলী টেক্সটাইল: আইপিও অর্থ ব্যবহার না করায় বিএসইসির উদ্বেগ
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি কাট্টলী টেক্সটাইল লিমিটেড ২০১৮ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ৩৪ কোটি সংগ্রহ করেছিল। দীর্ঘ চার বছর পেরিয়ে গেলেও কোম্পানিটি আইপিও অর্থ ব্যবহার করতে পারেনি।নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে কোম্পানিটির আইপিও অর্থ ব্যবহার পর্যালোচনা করতে একটি নিরীক্ষিক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।সূত্রমতে, কোম্পানিটি ২০১৮ সালে শেয়ারবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ৩৪ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। উত্তোলিত অর্থ কোম্পানির মূলধনী যন্ত্রপাতি, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার স্থাপন ও আইপিও খরচ মেটাতে ব্যবহার করার কথা।কিন্তু আইপিও অর্থ সংগ্রহ করার চার বছরের বেশি পেরিয়ে গেলেও কোম্পানি সংগৃহীত অর্থ ব্যবহার করতে পারেনি। ৩০ জুন, ২০২২ পর্যন্ত কোম্পানিটি আইপিও অর্থের মাত্র ১২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বা ৩৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ ব্যবহার করেছে। অবশিষ্ট২১ কোটি ১২ লাখ টাকা বা ৬২ দশমিক ১২ শতাংশ অর্থ এখনো অব্যবহ্নত রয়ে গেছে।উল্লেখ্য, কাট্টলী টেক্সটাইল শেয়ারবাজারের একটি অন্যতম আলোচিত কোম্পানি। অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আপত্তি থাকা সত্বেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোম্পানিটিকে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের অনুমতি দিয়েছিল।এছাড়া, কিছু বিনিয়োগকারীর কাছ থেকেও অভিযোগ ছিল যে, কোম্পানিটি নিজস্ব স্থাপনা ব্যবহার না করে ভাড়া দিয়ে রেখেছে এবং ভাড়া আয়ের উপরই কোম্পানির পরিচালন ব্যয় নির্ভরশীল।এরপর কোম্পানিটি মিথ্যা আর্থিক প্রতিবেদন ও ভুয়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিএসইসি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ১ কোটি টাকা এবং স্বতন্ত্র ও মনোনীত পরিচালক ব্যতীত অন্য পরিচালকদের প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে।কোম্পানীর প্রধান কার্যক্রম হল বিভিন্ন ধরনের গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি করা। কোম্পানিটির মাসিক উৎপাদন ক্ষমতা ৪ লাখ ৩৭ হাজার ২৫০ পিস গার্মেন্টস পণ্য।আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সমাপ্ত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই’২১-মার্চ’২২) কাট্টলি টেক্সটাইল শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) করেছে ১ টাকা ০৫ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯০ পয়সা। আলোচ্য সময়ে মুনাফা বেড়েছে ১৫ পয়সা বা ১৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।তবে অর্থবছরের সর্বশেষ প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২২) কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে। সর্বশেষ প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে ২০ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৯ পয়সা। আলোচ্য প্রান্তিকে ইপিএস কমেছে ০৯ পয়সা বা ৩১ দশমিক ০৩ শতাংশ।সর্বশেষ ২০২১ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। তার আগের বছর ২০২০ সালে ডিভিডেন্ড দিয়েছিল ২ শতাংশ ক্যাশ ও ৮ শতাংশ স্টক।ডিএসইর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ি, কাট্টলী টেক্সটাইলের মোট শেয়ার রয়েছে ১১ কোটি ৬৩ লাখ ০৫ হাজার ২০০টি। এরমধ্যে উদ্যেক্তা পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩০ দশমিক ৩২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪১ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

Share this news