ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারে ঝুঁকছে বিনিয়োগকারীরা, সর্বোচ্চ সতর্কতার পরামর্শ

Date: 2023-07-15 18:00:09
ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারে ঝুঁকছে বিনিয়োগকারীরা, সর্বোচ্চ সতর্কতার পরামর্শ
বিদায়ী সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক দাম বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে ফু-ওয়াং ফুড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, রূপালী ব্যাংক, ফু-ওয়াং সিরামিক, ইয়াকিন পলিমার, জেনারেশন নেক্সট, খুলনা প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং, ওরিয়ন ইনফিউশন ও ফার কেমিক্যালের শেয়ার।ক্যাটাগরি, পিই রেশিও, ডিভিডেন্ড ও মুনাফার দিক থেকে কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ শেয়ারই দুর্বল ও ঝুঁকিপুর্ণ। এসব শেয়ারে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা।ক্যাটাগরিকোম্পানিগুলোর মধ্যে কেবল ওরিয়ন ইনফিউশন ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার। বাকি সবগুলোই ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ার। তারমধ্যে সর্বশেষ ২০২২ সালে ডিভিডেন্ড দিয়ে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে রূপালী ব্যাংক, ফু-ওয়াং সিরামিক ও জেনারেশন নেক্সট।আর ২০২২ সালে ডিভিডেন্ড না দিয়ে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ইয়াকিন পলিমার, খুলনা প্রিন্টিং ও ফার কেমিক্যাল। এরমধ্যে ফুা-ওয়াং ফুড ও ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড পর পর দুই বছর অর্থাৎ ২০২১ ও ২০২২ সালে কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। বিএসইসির নিয়ম অনুযায়ি, দুটি কোম্পানিই ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাওয়ার কথা।পিই রেশিওকোম্পানিগুলো মধ্যে সর্বশেষ শেয়ারদর অনুযায়ি, রূপালী ব্যাংকের মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ২২.৬৩, ফু-ওয়াং সিরামিকের ৬৩.৬০, জেনারেশন নেক্সটের ৮৭.৮৬, ওরিয়ন ইনফিউশনের ১৮৫.১৬ এবং ফু-ওয়াং ফুডের ১৮৯.২৬। আর লোকসানের কারণে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ফার কেমিক্যাল, ইয়াকিন পলিমার ও খুলনা প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিংয়ের পিই রেশিও নেগেটিভ।ডিভিডেন্ডসর্বশেষ ৩০ জুন, ২০২২ অর্থবছরে ওরিয়ন ইনফিউশ ২০ শতাংশ ক্যাশ, রূপালী ব্যাংক ২ শতাংশ বোনাস, ফু-ওয়াং সিরামিক ২ শতাংশ ক্যাশ ও জেনারেশন নেক্সট ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।অন্যদিকে, ফু-ওয়াং ফুড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ইয়াকিন পলিমার, খুলনা প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং ও ফার কেমিক্যাল ‘নো ডিভিডেন্ড’ দিয়েছে। তবে ফু-ওয়াং ফুড ৩০ জুন, ২০২৩ অর্থবছরের জন্য ০.৫০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।সর্বশেষ ইপিএসসদ্য সমাপ্ত ৩০ জুন, ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বা তিন প্রান্তিকে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৪১ পয়সা, ফু-ওয়াং সিরামিকের ২৫ পয়সা, ফু-ওয়াং ফুডের ১৭ পয়সা ও জেনারেশন নেক্সটের ০৭ পয়সা। আর রূপালী ব্যাংকের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২৩) ইপিএস ৩৮ পয়সা।অন্যদিকে, ৩০ জুন, ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ফার কেমিক্যালের শেয়ারপ্রতি লোকসান ৫৬ পয়সা, ইয়াকিন পলিমারের শেয়ারপ্রতি লোকসান ৩২ পয়সা, খুলনা প্রিন্টিংয়ের শেয়ারপ্রতি লোকসান ১১ পয়সা (প্রথম দুই প্রান্তিকে)।আর ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড কোনো প্রান্তিকেরই আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদায়ী সপ্তাহে দাম বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় থাকা বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারই অতীব ঝুঁকিপূর্ণ। কয়েকটি কোম্পানির ব্যবসায়িক সুখবর থাকলেও বেশিরভাগ কোম্পানিরই দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই।বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেখানে ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার মাসের পর মাস ফ্লোর প্রাইসের গন্ডিতে আটকে রয়েছে, সেখানে দুর্বল কোম্পানিগুলোর শেয়ার কেবল কারসাজির কারণেই আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। ফেসবুকে নানা রকম গুঞ্জন ছড়িয়ে কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী করে তুলছে। এসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করলে ক্ষতি ও লোকসানের আশঙ্কাই বেশি। তাই কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

Share this news