ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের দুই ফার্মার দুর্দশা

Date: 2022-12-26 16:00:11
ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের দুই ফার্মার দুর্দশা
মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিওকে বিশ্বব্যাপী শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগের মাপকাঠী হিসাবে বিবেচনা করা হয়। পিই রেশিও ১০-এর নিচে থাকা শেয়ারকে বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা।এছাড়া, কোম্পানির ডিভিডেন্ড ও মুনাফায় যদি শক্ত ভিত্তি থাকে, তাহলে ১০-এর নিচে থাকা শেয়ারকে বিনিয়োগের জন্য অতীব ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।কিন্তু বিভিন্ন কারণে দেশের শেয়ারবাজারে মন্দাভাব ঝেঁকে বসায় বাজার বিশ্লেষকদের সেই অকাঠ্য দলিল এখন আর নির্ভুল বলে মেনে নিতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। মন্দার আঘাতে এখন পতনের ধারায় ভালো পিই বা মন্দ পিই, বিখ্যাত কিংবা অখ্যাত কোম্পানির বিচার করা হচ্ছে না। মন্দার বিশৃংখলায় এখন অখ্যাত-বিখ্যত সব শেয়ারই নিচে নামছে।এখন পতনের ধাক্কায় দেশের শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে দিনের পর দিন জোট বেঁধে ক্রেতা সংকটে ভুগছে। ফার্মা খাতে তেমনি দুটি মৌলভিত্তির শেয়ার হলো-একমি ল্যাবরেটরিজ ও স্কয়ার ফার্মা। কোম্পানি দুটির পিই রেশিও রয়েছে ১০-এর নিচে। ডিভিডেন্ড ও মুনাফায় রয়েছে স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি। তারপরও শেয়ারদর পতনে কোম্পানিগুলোর অন্যান্য কোম্পানিগুলোর চেয়ে বরং এগিয়েই রয়েছে।স্কয়ার ফার্মা: সর্বশেষ দর অনুযায়ী কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ৮.৪৬ পয়েন্টে। গত ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস আরোপ করার পর কোম্পানিটির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের ওপরে লেনদেন হচ্ছিল। ২০৯ টাকা ৮০ পয়সার ফ্লোর প্রাইসের শেয়ারটি ২২৬ টাকারও ওপরে উঠেছিল। কিন্তু পতনের পাল্লা ভারি হতে থাকায় মৌলভিত্তির এ শেয়ারটির পতনের ধারায় গা ভাসিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে ফ্লোর প্রাইসে এসে বন্দী হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে উঁকিঝুঁকি দিলেও ফের দুর্বল হয়ে ফ্লোর প্রাইসে বিশ্রামে চলে যায়। তখন থেকে বনেদি শেয়ারটির লেনদেনও শুন্যের কোটায় নেমে যায়। যদিও এক সময়ে শেয়ারটি শেয়ারাজারে শীর্ষ লেনদেন তালিকায় ঘুরেফিরেই স্থান করে নিতো।৩০ জুন, ২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি রেকর্ড সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এবছর কোম্পানিটি ১০০ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। আগের বছর ডিভিডেন্ড দিয়েছিল ৬০ শতাংশ ক্যাশ। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২০ টাকা ৫১ পয়সা। যা আগের অর্থবছরে ছিল ১৭ টাকা ৯৯ পয়সা। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ২০ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫ টাকা ৬৪ পয়সা। ডিভিডেন্ড ও মুনাফায় চমক থাকলেও কোম্পানিটির শেয়ার বিনিয়োগকারীরা হতাশায় ভুগছে।একমি ল্যাবরেটরিজ: সর্বশেষ দর অনুযায়ী কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ৭.২৫ পয়েন্টে। গত ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস আরোপ করার পর কোম্পানিটির শেয়ার ওপরে লেনদেন হচ্ছিল। ৮৫ টাকা ফ্লোর প্রাইসের শেয়ারটি ১০৫ টাকার ওপরেও লেনদেন হয়েছে। কিন্তু পতন ভারি হয়ে উঠায় গত ১০ নভেম্বর থেকে কোম্পানিটির শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ছুঁয়ে লেনদেন হচ্ছে। তখন থেকে লেনদেনও প্রায় শুন্যের কোটার চলে এসেছে। যদিও এর আগে প্রতিদিন লাখ লাখ শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।৩০ জুন, ২০২২ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি ৩০ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। আগের বছর ডিভিডেন্ড দিয়েছিল ২৫ শতাংশ নগদ। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৯ টাকা ৯৮ পয়সা। যা আগের অর্থবছরে ছিল ৭ টাকা ৪২ পয়সা। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৯৩ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৭৭ পয়সা। ডিভিডেন্ড ও মুনাফায় ঊর্ধ্বগতি থাকলে কোম্পানিটির শেয়ার নিম্নগতির ধারায় লেনদেন হচ্ছে।

Share this news