ইতিবাচক হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার
![ইতিবাচক হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার](https://stocknewsbd.s3.ap-southeast-1.amazonaws.com/4579/image-218631-21.jpg)
ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে ২০২২ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় কেটেছে। এর বাহিরে ছিলনা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারও, যার কারণে পুরো বছরজুড়েই শেয়ারবাজার ছিল টালমাটাল। তার প্রভাব ২০২৩ সালের প্রথম দুই সপ্তাহেও ছিল, কিন্তু তৃতীয় সপ্তাহ সপ্তাহে (১৫-১৯ জানুয়ারি) দেশের শেয়ারবাজারকে ইতিবাচক ধারায় ফিরতে দেখা গেছে।শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম বলেছিন জানুয়ারি মাসেই ঘুরে দাঁড়াবে শেয়ারবাজার। জানুয়ারি মাসে পুরোপুরি না ঘুরে দাঁড়াতে পারলেও ২০২৩ সালে প্রথম কোয়াটারের মধ্যে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, বাজারে ফান্ড আসতে শুরু করেছে। সরকারের বড় বড় প্রজেক্টগুলোর কাজ শেষ হয়ে এসেছে। এই প্রজেক্টগুলো থেকে এখন আয় আসার সময় হয়েছে। যা অর্থনীতির চাকাকে সচল করে তুলবে। আর অর্থনীতির চাকা সচল হলে শেয়ারবাজারও ঘুড়ে দাঁড়াবে।ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বৈশ্বক অর্থনীতি খারাপ হয়েছে। সেই যুদ্ধ অনেকটাই শেষ হয়ে এসেছে। দুই দেশের যুদ্ধ মীমাংসা হলে বৈশ্বিক অর্থনীতি আবারও ঘুরে দাঁড়াবে। এতে করে বাংলাদেশের অর্থনীতির পাশাপাশি শেয়ারবাজারও ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন তিনি আশা প্রকাশ করেন।গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান। সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ডিপোজিটরি ফান্ডকে এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এর ফলে শেয়ারবাজারে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে আইসিবির। এছাড়াও ব্যাংকগুলোর এখনও বাজারে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।বিএসইসির চেয়ারম্যানের এমন প্রত্যাশা এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ শেয়ারবাজারকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। যার কারণে গেলো সপ্তাহজুড়েই ছিল দেশের শেয়ারবাজার উর্ধ্বমূখী। যা সামনে আরও বেশি ভালো হবে বলে আসা করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।গেলো সপ্তাহের শেয়ারবাজার পর্যালোচনা:বিদায়ী সপ্তাহে শেয়ারবাজারে সূচকের সাথে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। বিদায়ী সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ৮৫০ কোটি ৫২ লাখ ১১ হাজার ১১১ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ১২১ কোটি ৪০ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৯ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে এক হাজার ৭২৯ কোটি ১১ লাখ ৫৩ হাজার ১৯২ টাকাবা ৮১ শতাংশ।জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫০ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৬৫ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৬৭ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২০৮ দশমিক ৬১ পয়েন্টে।বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল সাত লাখ ৫৪ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৫৬ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে দুই হাজার ১৪৯ কোটি টাকা।বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৪০০টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ৬৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০৭টির কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছিল ৪৭ কোটি ছয় লাখ টাকার। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেনে বেড়েছে ৫৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬৭ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৭৬ পয়েন্টে।সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩০০টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯১টির দর বেড়েছে, ৫৪টির কমেছে এবং ১৫৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।