ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের শেয়ার কারসাজি ধরার খোঁজে বিএসইসি
দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেডের শেয়ারের অস্বাভাবিকভাবে দর বৃদ্ধি ও লেনদেন নজরে পড়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)। কোম্পানিটির শেয়ারে কোনো কারসাজি হয়েছে কিনা তা জানতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। সেই সঙ্গে তদন্ত কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।বিএসইসির তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন:- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রকিবুর রহমান, সহকারী পরিচালক আসমাউল হুসনা এবং ডিএসইর সিনিয়র ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান।সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করেছে বিএসইসি। আদেশটি তদন্ত কমিটির সদস্যসহ ডিএসই প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) ও কোম্পানিকে জানানো হয়েছে।বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, কমিশন ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড শেয়ারের লেনদেনের ক্ষেত্রে দর এবং পরিমাণে সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিক গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছে। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কমিশন বিষয়টি তদন্ত করার প্রয়োজনীয়তা মনে করছে। সেক্ষেত্রে কমিশন একাধিক শর্ত উল্লেখ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।বিএসইসির শর্তে বলা হয়েছে, বাজার কারসাজি, ইনসাইডার ট্রেডিং এবং অন্যান্য অনিয়ম যদি থাকে সেগুলো শনাক্ত করতে হবে। কোম্পানির পাঁচ এলপিজি অটো গ্যাস স্টেশনে বিনিয়োগের বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পাঁচ সিএনজি স্টেশনসহ অন্যান্য নতুন বিনিয়োগের বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।তাই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ও সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী আদেশে উল্লেখিত বিএসইসি এবং ডিএসইর কর্মকর্তাদের তদন্ত পরিচালনার জন্য নিয়োগ করেছে কমিশন। সেই সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করবেন এবং কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে জানানো হয়েছে।কোম্পানিটির শেয়ার দর ও লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, শেয়ারটির দর গত ২৩ জুন ছিল ২০ টাকা ৪০ পয়সা। এরপর থেকেই শেয়ারের দর বৃদ্ধি পায়। পরে গত ২৭ অক্টোবর শেয়ারটির দর বৃদ্ধি পেয়ে ৫১ টাকা ৩০ পয়সা হয়। এরপর থেকে শেয়ারের দর কমতে শুরু করে। একইভাবে গত ২৩ জুন কোম্পানির মাত্র ২ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৮টি শেয়ার লেনদেন হলেও ৩ জুলাই কোম্পানিটির ১ কোটি ৩৯ লাখ ৩ হাজার ৮৫৩টি শেয়ার লেনদেন হয়। এরপর থেকে কোম্পানির শেয়ার লেনদেন কমতে থাকে।এর আগে, গত ১৩ ডিসেম্বর কোম্পানি জানায় ৫টি এলপিজি অটোগ্যাস ও সিএনজি স্টেশনে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে কোম্পানির দুইটি স্টেশন বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে।সূত্র জানায়, কোম্পানিটির ৯৪তম সভায় ৫টি অটোগ্যাস স্টেশনে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। আর কোম্পানির ১৪তম এজিএমে শেয়ারহোল্ডারা এই বিষয়ে অনুমোদন দেয়। এ ছাড়া কোম্পানির পর্ষদ ৯৪তম সভায় ৫টি মাদার-ডটার সিএনজি স্টেশনের অনুমোদন দেয়।গত ২৩ আগস্ট কোম্পানির বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) ৫টি এলপিজি অটোগ্যাস এবং সিএনজি স্টেশনের অনুমোদন দেওয়া হয়। কোম্পানিটির একটি এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন চট্ট্রগামে ও সিএনজি গ্যাস স্টেশন কেরানীগঞ্জে বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত। কোম্পানিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দুইটি স্টেশনেই আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে সম্পূর্ণভাবে কাজ শুরু করবে। কোম্পানিটি আরও জানায়, তাদের নতুন ব্যবসার পরিধি রাজস্ব বাড়াবে এবং গ্রাহকের আরও বেশি চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে।