ফরচুন সুজের শেয়ার কিনে বড় লোকসানে আইসিবি

Date: 2024-10-01 21:00:05
ফরচুন সুজের শেয়ার কিনে বড় লোকসানে আইসিবি
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ট্যানারি খাতের কোম্পানি ফরচুন সুজের ৫০ লাখ শেয়ার কিনে বড় লোকাসানে পড়েছে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। জেনেশুনে তুলনামূলক দূর্বল মৌলের এসব শেয়ার উচ্চ মূল্যে কিনেছিল আইসিবি। অভিযোগ আছে, কারসাজিকারীদের সুবিধা দিতে তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে এসব শেয়ার কিনেছিল তারা।তথ্য মতে, ২০২২ সালের ৯ মে ১২৪ টাকা ২৩ পয়সা দরে ফরচুনের ২৫ লাখ শেয়ার কিনে আইসিবি। একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আরও ২৫ লাখ শেয়ার কেনা হয় ৭৯ টাকা ৬৬ পয়সা দরে।অর্থাৎ দুই দফায় কেনা ফরচুন সুজের ৫০ লাখ শেয়ার কিনেছে আইসিবি, যার গড় মূল্য দাঁড়িয়েছে ১০১ টাকা ৯৪ পয়সা। এতে আলোচ্য শেয়ারের দাম পড়েছে ৫০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।অথচ গতকাল মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) ফরচুনের শেয়ারমূল্য কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৮ টাকা ৯০ পয়সা। এতে আইসিবির কেনা ৫০ লাখ শেয়ারের দাম কমে মাত্র ৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। এর ফলে ফরচুন সুজে বিনিয়োগ করে আইসিবির লোকসান হয়েছে ৪১ কোটি ৫২ লাখ টাকা।২০১৬ সালে তালিকাভুক্ত ফরচুন সুজের শেয়ার সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরের ২৬ তারিখ থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হচ্ছে। এর ফলে আলোচ্য এই একটি কোম্পানির শেয়ারেই আইসিবির ৬০ কোটি টাকা আটকা পড়েছে।এদিকে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ রয়েছে ফরচুন সুজের বিরুদ্ধে। আর এজন্যই সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়েছে কোম্পানিটিকে।অপরদিকে পুঁজিবাজারে বিগত সময়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও কারসাজির ঘটনা খতিয়ে দেখতে গত ১ সেপ্টেম্বর বিএসইসি কটি অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি ফরচুন সুজের শেয়ারে যাবতীয় অনিয়ম ও কারসাজি অনুসন্ধান ও তদন্ত করবে বলেও জানা গেছে।দীর্ঘদিন আইসিবির পোর্টফলিও ম্যানেজমেন্ট বিভাগে কর্মরত ছিলেন ডিজিএম ফারুক আলম। নানা অনিয়মের বেড়াজালে আটকা পড়া ফারুক আলম গত ৫ সেপ্টেম্বর চাকুরী থেকে ইস্তাফা দিয়েছেন, যা ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। অর্থাৎ বিএসইসি তদন্ত শুরু করার পরপরই তিনি চাকরি ছাড়লেন।ফারুক আলমের বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে, এমডির আস্থাভাজন হিসেবে শেয়ারের কারসাজির মাধ্যমে তিনি অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।এবিষয়ে বক্তব্য জানতে চেষ্টা করেও ফারুক আলমকে ফোনে পাওয়া যায়নি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইসিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, একটি চক্র আইসিবির অনেক বেশি ক্ষতি করেছে। এর ফলে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জড়িত অনেকে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। আইসিবিতে সংঘটিত নানা অনিয়ম প্রকাশ্যে আনতে হলে এদের দেশ ত্যাগে বাধা দেয়া উচিত বলে তিনি মনে করছেন।এদিকে সম্প্রতি আইসিবির চেয়ারম্যান ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ অর্থসূচককে বলেছিলেন, আইসিবির পোর্টফোলিওতে জাঙ্ক শেয়ারের ছড়াছড়ি। ওগুলো থেকে আইসিবি ভালো কিছু পাবে না। আইসিবি নিজের টাকা হারিয়ে এখন তারল্য সংকটে ভুগছে।তিনি আরও বলেন, এখন নতুন সরকার, একইসঙ্গে নতুন পলিসি। এখন আর আইসিবিকে দিয়ে জোর করে শেয়ার কেনানো যাবে না।

Share this news