এশিয়াটিকের আগের রেকর্ড তারিখ বহাল রাখতে আইনি নোটিশ

এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে আবেদনের যোগ্যতা নির্ধারণে আগে ঘোষিত রেকর্ড তারিখ বহাল রাখাতে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ((বিএসইসি) চেয়ারম্যান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইস্যু ম্যানেজার এবং এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাছে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনি নোটিশ পাঠানো বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভুতি ভূষণ সরকার।আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, মোঃ হাবিবুর রহমান বাংলাদেশের একজন স্থায়ী নাগরিক। তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই) দ্বারা পরিচালিত এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত স্টক মার্কেটের একজন বিনিয়োগকারী। তিনি একটি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট (BO অ্যাকাউন্ট) তৈরি করেছেন এবং দীর্ঘদিন ধরে তার বিনিয়োগ পরিচালনা করেছেন।এদিকে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মেমো নং বিএসইসি/সিআই/আইপিও সহ বুক বিল্ডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রাথমিক পাবলিক অফারিং (আইপিও) এর অধীনে সাধারণ শেয়ার ইস্যু করার মাধ্যমে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের ৯৫ কোটি মূলধন বাড়াতে সম্মত হয়েছে।এর পরে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড সাধারণ পাবলিক ক্যাটাগরিদের জন্য তাদের স্টকব্রোকার/মার্চেন্ট ব্যাংকারের মাধ্যমে উল্লিখিত কোম্পানির শেয়ারের জন্য তাদের আবেদন জমা দেওয়ার জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে ৮ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে (Mature Securities) ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে ও ন্যূনতম বিনিয়োগের জন্য একটি কাট-অফ তারিখ/ রেকর্ড তারিখ সেট করতে। উক্ত তারিখে বিনিয়োগকারী মোঃ ন্যূনতম বিনিয়োগের জন্য কাট-অফ/রেকর্ড তারিখের শর্ত পূরণ করেছে এবং IPO-এর জন্য আবেদন জমা দেওয়ার যোগ্য ছিল।কিন্তু কোম্পানির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সে বছরের ১৫ জানুয়ারি তারিখে অর্থাৎ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আইপিও আবেদন শুরুর ঠিক আগের দিন বিএসইসি কোম্পানিটির আইপিও ঘোষণা স্থগিত করে।যে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার এবং অন্যান্য সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা পূরণ করার পরে, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড একটি নোটিশ জারি করেছে। নোটিশে নিলাম মূল্যে এবং আইপিওর সাধারণের রেকর্ড তারিখে আগে একবার বিনিয়োগের শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও কোম্পানিটি সেকেন্ডারি মার্কেটে নির্ধারিত বিনিয়োগ রাখার জন্য নতুন করে ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করে।এর প্রেক্ষিতে উক্ত আইনি নোটিশে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভুতি ভূষণ সরকার জানিয়েছেন, ‘আমার ক্লায়েন্ট ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে যোগ্য বিনিয়োগকারী ছিলেন এবং আইপিও স্থগিত করার দায় তার নয়, তার কোন দোষ ছিল না। তাই, শিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের আইপিও আবেদনের জন্য নতুন করে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করার বিষয়টিকে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারীতা, অসৎ এবং আইনের বিরোধী। উপরোক্ত প্রাঙ্গনে, আপনাকে এতদ্বারা IPO নোটিশটি সংশোধন করতে এবং এই নোটিশ প্রাপ্তির তারিখ থেকে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে তা জানানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে, আপনাদের সকলের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমার মক্কেলের কাছ থেকে আমার স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।‘তবে, নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো কাট-অফ তারিখ নির্ধারণ করতে কোনো আপত্তি নেই বলে আইনি নোটিশটিতে জানানো হয়েছে।উল্লেখ, ২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজকে আইপিওর মাধ্যমে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৯৫ কোটি টাকা উত্তোলনের জন্য অনুমতি দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। সেসময় অনুমোদিত এ কোম্পানিটির যথারীতি নিলাম মূল্য নির্ধারিত হয় ৫০ টাকা। আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়। বিএসইসির দেওয়া শর্ত অনুসারে, আগ্রহী নিবাসী বিনিয়োগকারীরা সেকেন্ডারি মার্কেটে ৫০ হাজার টাকার এবং অনিবাসী বিনিয়োগকারীরা ১ লাখ টাকার শেয়ার কিনে আবেদনের প্রস্তুতি নেন। কিন্তু কোম্পানির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সে বছরের ১৫ জানুয়ারি তারিখে অর্থাৎ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আইপিও আবেদন শুরুর ঠিক আগের দিন বিএসইসি কোম্পানিটির আইপিও ঘোষণা স্থগিত করে।কিন্তু গত বছরের ২৮ নভেম্বর কমিশনের ৮৮৯ তম সভায় বিএসইসি কোম্পানিটির আইপিওতে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে। কিন্তু নিলাম মূল্যে এবং আইপিওর সাধারণের রেকর্ড তারিখে আগে একবার বিনিয়োগের শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও কোম্পানিটি সেকেন্ডারি মার্কেটে নির্ধারিত বিনিয়োগ রাখার জন্য নতুন করে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করে।অনেক বিনিয়োগকারীর মতে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের আইপিও আবেদনের জন্য এই নতুন করে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করার বিষয়টি সম্পূর্ণ আইনের পরিপন্থী, অবিচার এবং একই ক্ষেত্রে দুই রকম নিয়ম। তারা মনে করেন, বর্তমানে শেয়ার মার্কেটের খারাপ অবস্থায় দ্বিতীয়বার শেয়ার কিনতে হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আবারও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।