এশিয়াটিকের আগের রেকর্ড তারিখ বহাল রাখার দাবি বিনিয়োগকারীদের

এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে আবেদনের যোগ্যতা নির্ধারণে আগে ঘোষিত রেকর্ড তারিখ বহাল রাখার আবেদন জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) নিজেদের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর প্রদান করেন বিনিয়োগকারীরা।এছাড়াও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইস্যু ম্যানেজার এবং এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের চেয়ারম্যানের কাছে চিঠির কপি দিয়েছেন তারা।চিঠিতে বিনয়োগকারীরা জানান, ২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজকে আইপিওর মাধ্যমে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৯৫ কোটি টাকা উত্তোলনের জন্য অনুমতি দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। পরবর্তীতে ওই বছরের ১০ অক্টোবর হতে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রির বিডিং বা নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। আর রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৮ সেপ্টেম্বর।LankaBangla securites single pageসেসময় অনুমোদিত এ কোম্পানিটির যথারীতি নিলাম মূল্য নির্ধারিত হয় ৫০ টাকা। আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারী এবং প্রবাসীদের আবেদন করার সময় ঠিক করা হয় ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি হতে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত। আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে একই বছরের ৮ জানুয়ারি রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়। শর্ত অনুসারে, ওই তারিখে কোনো নিবাসী বিনিয়োগকারীর ৫০ হাজার টাকা এবং অনিবাসী (NRB) বিনিয়োগকারীর ১ লাখ টাকা সেকেন্ডারি বাজারে বিনিয়োগ থাকতে হবে।বিএসইসির দেওয়া শর্ত অনুসারে, আগ্রহী নিবাসী বিনিয়োগকারীরা সেকেন্ডারি মার্কেটে ৫০ হাজার টাকার এবং অনিবাসী বিনিয়োগকারীরা ১ লাখ টাকার শেয়ার কিনে আবেদনের প্রস্তুতি নেন। কিন্তু কোম্পানির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সে বছরের ১৫ জানুয়ারি তারিখে অর্থাৎ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আইপিও আবেদন শুরুর ঠিক আগের দিন বিএসইসি কোম্পানিটির আইপিও ঘোষণা স্থগিত করে।গত বছরের ২৮ নভেম্বর কমিশনের ৮৮৯ তম সভায় বিএসইসি কোম্পানিটির আইপিওতে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে। কিন্তু নিলাম মূল্যে এবং আইপিওর সাধারণের রেকর্ড তারিখে আগে একবার বিনিয়োগের শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও কোম্পানিটি সেকেন্ডারি মার্কেটে নির্ধারিত বিনিয়োগ রাখার জন্য নতুন করে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করে।বিনিয়োগকারীরা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের আইপিও আবেদনের জন্য নতুন করে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করার বিষয়টিকে সম্পূর্ণ আইনের পরিপন্থী, অবিচার এবং একই ক্ষেত্রে দুই রকম নিয়ম বলে উল্লেখ করেছেন। তারা মনে করেন, বর্তমানে শেয়ার মার্কেটের খারাপ অবস্থায় দ্বিতীয়বার শেয়ার কিনতে হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আবারও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।এদিকে কমিশনের তদন্তে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের সম্পদের পরিমাণ যেহেতু এখন কমে গেছে তাহলে তাদের দেওয়া আগের শেয়ার প্রতি আয় (EPS) ও নিট সম্পদ মূল্য (NAV) ও কমে যাবে। আর সেই ক্ষেত্রে এখন নতুন করে নিলাম হলে বিডিং প্রাইস ও অনেক কমে যাবে। এক্ষেত্রে পূর্বের বিডিং প্রাইস বাতিল না করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগের রেকর্ড ডেট বহাল রাখার আবেদন জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের কোম্পানি সচিব ইশতিয়াক আহমেদ অর্থসূচককে বলেন, আমরা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কাছে রেকর্ড তারিখের বিষয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। তারা এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি।এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম তারিকুজ্জামান অর্থসূচককে বলেন, আমি ঢাকার বাইরে। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।বিনিয়োগকারীদের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিএসইসির পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে সংস্থাটির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বিনিয়োগকারীরা কমিশনে আবেদন করে থাকলে কমিশন তা পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখবে।এদিকে নাম প্রকাশে একজন বাজার বিশ্লেষক বলেছেন, বিএসইসি চাইলে সহজেই আলোচিত জটিলতা এড়াতে পারে। আগের রেকর্ড তারিখে যারা বিনিয়োগের শর্ত পূরণ করেছিলেন, তাদেরকে আবেদনের জন্য যোগ্য ঘোষণা করে নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন রেকর্ড তারিখ প্রযোজ্য করলেই সমাধান হয়ে যায়।