এশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে দরপতন

Date: 2022-10-09 03:00:11
এশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে দরপতন
গেল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার এশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। মূলত বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কা ক্রমেই ঘনীভূত হওয়ার কারণে বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে।এশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে দরপতন হলেও মধ্যপ্রাচ্যের শেয়ারবাজারে মিশ্র প্রবণতা দেখা গিয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, জর্ডান ও লেবাননের শেয়ারবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। অন্যদিকে পয়েন্ট হারিয়েছে কুয়েত, সৌদি আরব, ওমান ও মরক্কোর শেয়ারবাজার।যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক গত শুক্রবার ৬ দশমিক ১৮ পয়েন্ট ও জার্মানির ব্লুচিপ সূচক ডিএএক্স ১৯৭ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট হারিয়েছে। একই সময়ে ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক কমেছে ৬৯ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট।ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, জার্মানি, গ্রিস, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, স্পেন, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, পর্তুগাল, অস্ট্রিয়া, সুইডেন ও আয়ারল্যান্ডের শেয়ারবাজার পয়েন্ট হারিয়েছে। অন্যদিকে এ সময়ে নরওয়ে, হাঙ্গেরি ও লুক্সেমবার্গের শেয়ারবাজারে পয়েন্ট যোগ হয়েছে।সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ২ দশমিক ১১ শতাংশ বা ৬৩০ পয়েন্ট কমেছে। একই সময়ে দেশটির এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ২ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ১০৪ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট ও নাসডাক সূচক ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ৪২০ দশমিক ৯১ পয়েন্ট হারিয়েছে।আরও পড়ুন:চলতি সপ্তাহে আসছে সাত কোম্পানির ডিভিডেন্ডযুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এই অঞ্চলের আর্জেন্টিনা, পেরু, ব্রাজিল, মেক্সিকো, চিলি ও কলম্বিয়ার শেয়ারবাজার পয়েন্ট হারিয়েছে। অন্যদিকে ভেনিজুয়েলার শেয়ারবাজার এ সময়ে ঊর্ধ্বমুখী ছিল।এদিকে, এশিয়ার অন্যতম প্রধান শেয়ারবাজার জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক এদিন ১৯৫ দশমিক ১৯ পয়েন্ট কমেছে। ভারতের বিএসই সেনসেক্স সূচক ৩০ দশমিক ৮১, ভিয়েতনামের হ্যাং সেং সূচক ২৭২ দশমিক ১০ ও চীনের সাংহাই সূচক ১৬ দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমেছে।এছাড়া, শুক্রবার হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজল্যান্ড, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা ও ফিলিপাইনের শেয়ারবাজারও পয়েন্ট হারিয়েছে।বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটিতে কর্মসংস্থানের হার কমেছে। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সামনে সুদের হার আরো বাড়ানোর পথে রয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। এতে দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা আরো ঘনীভূত হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ইউরোপের অর্থনীতি মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যে রয়েছে।সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন হওয়ার কারণে সংকট আরো জটিল ও দীর্ঘায়িত হওয়ার দিকে যাচ্ছে। এতে এই অঞ্চলের দেশগুলো অর্থনীতি সংকুচিত হওয়ার দিকে যাচ্ছে। তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জ্বালানি তেলের উৎপাদন দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল কমানোর ঘোষণার কারণে এশিয়ার শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, এই অঞ্চলের দেশগুলো জ্বালানির জন্য পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে জ্বালানি খাতে বাড়তি ব্যয়ের বোঝা টানতে হচ্ছে দেশগুলোকে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ব্যয় অনেক বেড়ে গিয়েছে। এতে কোম্পানিগুলোর মুনাফা সংকুচিত হবে এবং এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে শেয়ারবাজারেও। তেলের উৎপাদন কমানোর ঘোষণায় বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গিয়েছে এবং এতে তেলের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দর বেড়েছে।

Share this news