এস আলমমুক্ত হওয়ার পর এসআইবিএল’র ৭৯৪ কোটি টাকা ঋণ আদায়

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) দেশের সবচেয়ে বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়ার পর ৭৯৪ কোটি টাকার ঋণ আদায় করেছে।ব্যাংকটির পুনর্গটিত বোর্ডের বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান প্রফেসর এম সাদিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এসআইবিএল দখল হয়ে যাওয়ার পর ব্যাংকটিতে সুশাসনের ঘাটতি হয় এবং নিয়ম মেনে ঋণ বিতরণ করা হয়নি। তবে এখন ব্যাংকটিতে আবারও স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। অল্প সময়ে ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করেন তিনি।সোমবার (০৭ অক্টোবর) ব্যাংকটির সার্বিক অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই মন্তব্য করেন এম সাদিকুল ইসলাম। এ সময় ব্যাংকটির পরিচালক মাকসুদা বেগম, মো. মোরশেদ আলম খন্দকার ও মো. আনোয়ার হোসেনের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ ফোরকানুল্লাহ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আবদুল হান্নান খান, বিনিয়োগ বিভাগের প্রধান মো. নাজমুস সায়াদাতসহ সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।এর আগে গত ২৫ আগস্ট এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন একজন উদ্যোক্তা শেয়ারধারীকে পরিচালক ও চারজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরিষদ পুনর্গঠনের পর পদত্যাগ করেন ব্যাংকটির এমডি জাফর আলম, ডিএমডি হাবিবুর রহমান ও খোরশেদ আলম।অভিযোগ রয়েছে, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর ব্যাংকটি থেকে নানা অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকটি আর্থিক সংকটে পড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় দুই বছর ধরে টাকা ছাপিয়ে ব্যাংকটিকে সহায়তা দিয়ে আসছিল। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর সেই সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্যাংকটি তারল্যসংকটে পড়ে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়।কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন ব্যাংকটিকে সরাসরি টাকা ধার না দিয়ে গ্যারান্টি সুবিধার মাধ্যমে অর্থের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোকে বর্তমানে এভাবে সহায়তা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর সাদিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ৯০০ কোটি টাকা গ্যারান্টি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইতিমধ্যে ৪৫০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। আরও কয়েকটি ব্যাংক টাকা ধার দেওয়া ও আমানত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা আবারও ১৮টি সেবা প্রতিষ্ঠানের সেবা মাশুল নেওয়া শুরু করেছি। গ্রাহকেরা শাখা থেকে ছোট পরিমাণে টাকা উত্তোলন করতে পারছেন। রেমিট্যান্সের টাকা পেতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সামনে এটিএম ও ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচের সেবাও চালু হয়ে যাবে।ব্যাংক থেকে কত টাকা বের করা হয়েছে, তা জানতে চাইলে এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, এই ব্যাংক থেকে কে কত টাকা ঋণ নিয়েছে, তা চিহ্নিত করা গেছে। এস আলম গ্রুপ নামে ও বেনামে ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। তাদের ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানে আরও ৪৭১ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান চালু আছে, ফলে এসব টাকা আদায় করা সম্ভব হবে।